নিজস্ব প্রতিবেদক : শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে যশোরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার শংকরপুর বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধানিবেদন শেষে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
যশোর শহরস্থ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বুদ্ধিজীবীদের রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া—মোনাজাতসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের পক্ষ থেকে যশোর শহরস্থ শংকরপুরের শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে বিশ^বিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান। এরপর বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, কর্মচারী সমিতি, শহীদ মসিয়ূর রহমান হল ও শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের পক্ষ থেকে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
সকাল ১০টায় বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্যালারিতে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভার শুরুতে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার নীল—নকশা নিয়ে বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান।
ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. আলম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিশ^বিদ্যালয়ের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. মুনিবুর রহমান, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব প্রমুখ। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের সহকারী পরিচালক এস এম সামিউল আলম। এ ছাড়া কর্মসূচিগুলোতে যবিপ্রবির বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, দপ্তর প্রধানগণ, শিক্ষক—শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা—কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
বাদ জোহর বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের রূহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া—মোনাজাত করা হয়। দোয়া—মোনাজাত পরিচালনা করেন যবিপ্রবির কেন্দ্রীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মো. আকরামুল ইসলাম।
দিবসটি উপলক্ষে সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু বক্কর সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মদন কুমার সাহা।
যশোর সরকারি মহিলা কলেজে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শেখ রাসেল দেয়ালিকা উদ্বোধন করা হয়। সার্বিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যক্ষ প্রফেসর অমল কুমার বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মিয়া আব্দুর রশিদ, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর মাহবুবুল হক খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুল ইসলাম বিশ্বাস।
যশোর সিটি কলেজে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার প্রধান অতিথি ছিলেন প্রফেসর অরবিন্দু কুমার কুন্ডু। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপাধ্যক্ষ প্রেফেসর অমলেন্দু বিশ্বাস, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক আব্দুল হালিম। সভাপতিত্ব করেন, আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর অলোক বসু।
যশোর জিলা স্কুলে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, প্রধান শিক্ষক শোয়াইব হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিনিয়র শিক্ষক নজরুল ইসলাম ও জামাল উদ্দিন।
ইবি : বিনম্র শ্রদ্ধায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) এ উপলক্ষে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন, কালোব্যাজ ধারণ, শোক র্যালি এবং শহীদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে কর্তৃপক্ষ।
এদিন বেলা সাড়ে ১০টায় দিবসটি উপলক্ষে প্রশাসন ভবন চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অর্ধনমিত করেন প্রো—ভিসি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া। পরে সেখান থেকে প্রো—ভিসি ও কোষাধ্যক্ষের নেতৃত্বে শোকর্যালি বের করা হয়।
র্যালিটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয় স্মৃতিসৌধে মিলিত হয়। এ সময় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে একে একে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা সমিতি, বিভিন্ন বিভাগ ও হল, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, শাপলা ফোরাম, জিয়া পরিষদ, সাদা দল, শাখা ছাত্রলীগ, ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। পরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন এবং রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।