নেংগুড়াহাট (মনিরামপুর) প্রতিনিধি: মনিরামপুর উপজেলা রাজগঞ্জে নেংগুড়াহাটে জমে উঠেছে খেজুর গুড়ের হাট।
প্রতি বছর শীত মৌসুমে খেজুরের গুড় বেচাকেনা হয় এ হাটে। মৌসুমের প্রায় পুরোটা সময় ক্রেতা—বিক্রেতার ভিড়ে সরগরম থাকে হাটটি। গুড় কিনতে বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন ব্যাপারীরা। হাটটির ঐতিহ্য বহু বছরের।
উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের ত্রিমোহনী, খোরদো—আঞ্চলিক সড়ক ঘেঁষে গড়ে ওঠা হাটটিতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। সপ্তাহে দুইদিন সোমবার ও বৃহস্পতিবার বসা হাটে প্রতি সপ্তাহে অনেক টাকার গুড় কেনাবেচা হয়। ১৮ থেকে ২০ কেজির এক ভাড় গুড় ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা বিক্রি হয়। এখানকার খেজুরের গুড়ের চাহিদা বেশি থাকায় দামও এবার বেশি।
হাটে গিয়ে দেখা যায়,হাটজুড়ে সাজানো গুড়ভর্তি মাটির ভাড় ছোট বড় পাত্রে নলেন পাটালি। ক্রেতা—বিক্রেতারা তা দাঁড়িয়ে দেখছেন, দরদাম ঠিক হলে ওজন করে ভর্তি করা হচ্ছে গাড়িতে। আবার কেউ কেউ নিজের বাড়ি বা আÍীয়ের বাড়ি পাঠানোর জন্য কিনছেন গুড়, হাটের প্রবেশপথের। দুইধারে বসে কৃষকেরা বড় পাত্রে করে তাদের বাড়িতে তৈরি পাটালি বিক্রি করছেন। পাটালির দোকান পার হয়ে ভেতরে যত যাওয়া যায়,বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ততই চোখে পড়ে সারি সারি সাজানো গুড়ের ভাড়। হাটের একাধিক স্থানে দাঁড়িপাল¬ায় গুড় মেপে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা,রাজগঞ্জের গুড়ের হাটে।
গুড় বিক্রি করতে আসা গৌরীপুর গ্রামের গাছি আতিয়ার রহমান, বজলুর রহমান বলেন, গত বিশ বছর ধরে এই হাটে গুড় বিক্রয় করতে আসি। আমাদের কাছ থেকে দেশের বিভিন্ন জাগায় থেকে ব্যাপারীরা গুড় কিনে নিয়ে যায়। এ বছর দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে, ভাড় প্রতি গুড় ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হাটের দিন গড়ে ৫ থেকে ৭ভাড় খেজুরগুড় বিক্রি হয়। যার দাম প্রায় ৫থেকে ৬লাখ টাকা।
ক্রেতা রিপন হোসেন, মনা বলেন, আগের চেয়ে এ বছর গুড়ের দাম বেশি। ১৮কেজি ওজনের এক ভাড় গুড়ের দাম ৩ হাজার টাকা প্রায়। রামনগর থেকে গুড় কিনতে আসা আরশাদ আলী, আব্দুল জলিল, হাসেম আলী বলেন দেশের অন্যান্য হাটে এখানকার চেয়ে কমদামে গুড় পাওয়া যায় তবে, সে সব গুড়ে চিনি মেশানো থাকে।
কৃষি উপসহকারী ফারহানা ফেরদৌস বলেন, মৌসুমে প্রতিটি গাছ থেকে অন্তত ১০কেজি গুড় পাওয়া যায়। সে হিসেবে এ উপজেলায় প্রতিবছর গড়ে ২হাজার ৫০০মেট্রিক টন গুড় উৎপাদিত হয়ে থাকে।
মনিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের কৃষি উপসহকারী তথ্য মতে, উপজেলায় ২লাখ ৫০হাজারের মতো খেজুরগাছ রয়েছে। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত চলে গুড়ের মৌসুম। প্রতি মৌসুমে গড়ে আড়াই হাজার মেট্রিক টন গুড় উৎপাদিত হয়।