৬ই মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বেইলি রোড ট্র্যাজেডি
43 বার পঠিত

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল একটি ভবনে অগ্নিকান্ডে অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রেস্টুরেন্টের আধিক্য ছিল ওই ভবনে, গ্যাস সিলিন্ডারও ছিল যথেষ্ট পরিমাণে। এমনকি সিঁড়িতেও রাখা ছিল গ্যাস সিলিন্ডার। ফলে, সেগুলোয় আগুন ধরে গেলে পুরো ভবনটিই মৃত্যুঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। মানুষ সিঁড়ি দিয়ে নামতে পারেননি। আÍরক্ষায় ছাদে আশ্রয় গ্রহণরতদের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একে একে উদ্ধার করেছেন। বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে প্রায় অর্ধশত মানুষের আকস্মিক মৃত্যুতে সমাজের কথা পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। আমরা নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি জানাই আন্তরিক সমবেদনা। একই সঙ্গে এই অগ্নিকান্ডে আহত বহু মানুষের দ্রুত আরোগ্য প্রত্যাশা করি।

ক্ষোভের সঙ্গেই বলতে হয় দুর্ঘটনার পর যত উৎকণ্ঠা, সমালোচনা আর দায়িত্বে অবহেলার বিবরণ পড়ি সংবাদপত্রে, সেখান থেকে কি আমরা শিক্ষা গ্রহণ করি? রাজধানীর সব এলাকাতেই কোনো না কোনো বহুতল ভবনে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা ছাড়াও অন্য বাণিজ্যিক কার্যালয় চলমান। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের একাধিক ভবন বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে নক্সা করা হলেও সেখানে এখন ১০—১৫টা করে রেস্টুরেন্ট। এসব ভবন ঘিরে অনেকেই উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন। কোনো কোনো ভবনের কাগুজে ফায়ার লাইসেন্সও রয়েছে। কিন্তু লাইসেন্স কি বাঁচাতে পারে অগ্নিকা— থেকে, যদি না সত্যিকারের সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়?
বেইলি রোডে বহুতল ভবনের অগ্নিকান্ড আমাদের এ বাস্তবতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, ঢাকার অসংখ্য ভবন এক একটা অগ্নিবোমা হিসেবে বিস্ফোরণের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এখনই সতর্ক ও সচেতন না হলে এমন আরও অগ্নিকান্ডের আশঙ্কা কিছুতেই দূর হবে না।

ঢাকায় প্রতিবছরই বড় ধরনের অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। এরপর হয়তো আরেকটি ঘটনা এসে বেইলি রোডের ঘটনার বেদনাকে বিস্মৃতির অতলে নিয়ে যাবে। এত যে প্রাণ যায়, মানুষের মৃত্যু হয়, মানুষ সর্বস্বান্ত হয় কিন্তু দায়িত্বহীনতার যেন অবসান হয় না। আগুনের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপাপড়া সত্যকে তাই অনুধাবন করা চাই। সব অগ্নিকান্ডই দুর্ঘটনা নয়, এসব আমাদেরই অবহেলা, অসচেতনতা ও নির্বুদ্ধিতার ফল।

আমরা বারবার বলে আসছি, যে কোনো কারণেই হোক, কোনো ভবনে আগুন লাগতেই পারে। তাই জরুরি হচ্ছে ভবনে পূর্ণাঙ্গ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা আছে কিনা, সেটি নিশ্চিত হওয়া। আগুন লাগলে জরুরি ভিত্তিতে মানুষ ভবন থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন কিনা, তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা বহুতল ভবনের জন্য অত্যাবশ্যক। এ ব্যবস্থা আছে কিনা, সেটি তদারকি করার কথা সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের। এক্ষেত্রে গাফিলতি থাকে। দ্বিতীয়ত, বাণিজ্যিক ভবনে, বিশেষ করে যে ভবনে রেস্টুরেন্টের আধিক্য রয়েছে, সে ভবনে অগ্নিঝুঁকি থাকবেই। গ্যাসসিলিন্ডার রক্ষণাবেক্ষণেও তাই সতর্কতা বাঞ্ছনীয়। যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার রাখা বন্ধ করা চাই। অশনিসংকেত উপেক্ষা করে গেলে একদিন হাহাকারের শেষ থাকবে না।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram