৮ই মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সাইলেন্ট স্ট্রোকের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার
69 বার পঠিত

অধ্যাপক ডা. এস এম জহিরুল হক চৌধুরী : স্ট্রোক বলতে আমরা জানি, মুখ বা শরীরের নড়াচড়া করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা। কিন্তু এসব লক্ষণ না থাকলেও মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এ ধরনের স্ট্রোককে বলা হয় সাইলেন্ট বা নীরব স্ট্রোক।

<<আরও পড়তে পারেন>> চিকেনপক্স হলে করণীয়

সাইলেন্ট স্ট্রোক তখনই ঘটে, যখন মস্তিষ্কের একটি অংশে রক্ত সরবরাহ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে ব্যক্তিটির মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবারাহে বিঘ্ন ঘটে এবং প্রক্রিয়াটিতে কিছু স্নায়ুকোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর লক্ষণ স্পষ্ট বোঝা না গেলেও এতে মস্তিষ্কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হয়। লক্ষ্য করা গেছে, কারও উচ্চ রক্তচাপ বা অনিয়মিত হৃদস্পন্দন থাকলে স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। বিশেষ করে সাইলেন্ট স্ট্রোক। কারণ আক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্কের এমন একটি অংশে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত করে, যা কথা বলা বা চলাফেরার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো নিয়ন্ত্রণ করে না। যদি একজন ব্যক্তির এক বা একাধিক সাইলেন্ট স্ট্রোক থাকে, তবে তিনি চিন্তাভাবনা ও স্মৃতিশক্তির সমস্যায় ভুগতে পারেন। সাইলেন্ট স্ট্রোক আরও গুরুতর স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।

লক্ষণ : জ্ঞানের দক্ষতায় ব্যাঘাত ঘটে। পেশি, বিশেষ করে মূত্রাশয়ের অস্থায়ী নড়াচড়া ক্ষতিগ্রস্থ হয়। শারীরিক ভারসাম্যের ব্যাঘাত ঘটে। মন—মেজাজ ও ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন ঘটে। শারীরিক শক্তি হ্রাস পায়। দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। হঠাৎ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যায়।

সাইলেন্ট স্ট্রোকে যা করবেন : যখন কেউ সাইলেন্ট স্ট্রোক (সাধারণত লক্ষণীয় লক্ষণগুলোর কারণ হয় না) অনুভব করেন, তা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাবেন। চিকিৎসকের পরামর্শে মস্তিষ্কের অস্বাভাবিকতা হয়েছে কিনা বোঝার জন্য এমআরআই বা সিটি স্ক্যান করতে পারেন। যদি সাইলেন্ট স্ট্রোক হয়েছে এটা পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ, জীবনযাত্রার পরিবর্তন বা ফিজিওথেরাপি নিতে পারেন। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, স্বাস্থ্যকর সুষম খাদ্যাভাস বজায় রাখতে হবে। শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে হবে। ধূমপান স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই ধূমপান পুরোপুরি বাদ দিতে হবে। এছাড়া নিয়মিত ডাক্তারের ফলো—আপে থাকতে হবে। সাইলেন্ট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে পরিবারের সদস্যরা মানসিক সমর্থন দিন। লক্ষণীয় লক্ষণ না থাকলেও সুপারিশকৃত চিকিৎসা পরামর্শ মেনে চলতে সহায়তা করুন।

প্রতিকার : স্ট্রোকের ঝুঁকির কারণগুলো চিহ্নিত করে তার প্রতিকার করতে হবে। যেমন—উচ্চ রক্তচাপ, ভাস্কুলার ডিজিজ ও ডায়াবেটিসের মতো কারণগুলো স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বাড়ায়। তাই এসব রোগ থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখুন। নিয়মিত কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করা, রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারে। ধূমপানের কারণে সাইলেন্ট স্ট্রোক হতে পারে। ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্রহণ বাদ দিতে হবে। সাইলেন্ট স্ট্রোক হয়েছে বুঝতে পারলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যান।

লেখক : অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগ

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram