নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে থিয়েটার ক্যানভাস আয়োজিত ১৭ দিনের দক্ষিণ এশীয় নাট্য উৎসবের দশমদিনে রোববার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয়েছে নাটক ‘ওয়ান ফ্রাইডে মর্নিং’। সঞ্চয়িতা বসু রচিত এবং নির্দেশিত এই নাটকটি পরিবেশন করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মধ্যমগ্রামের নৃত্যবিতান। ৫০ মিনিটের এ নাটকে মাত্র দু’জনই ছিলেন অভিনেত্রী। তাদের অভিনয় করেছেন মুগ্ধ করেছে সকলকেই। সংলাপ নিক্ষেপ, অভিনয়ের চাটুলতা, পোশাক পরিচ্ছদ সবই ভালোলাগার মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। অভিনয়ে ছিলেন সঞ্চয়িতা বসু ও পৌলোমী সেনগুপ্ত।
‘ওয়ান ফ্রাইডে মর্নিং’ নাটকে মূলত নিম্নবর্ণের মানুষের অধিকারের কথা বলা হয়েছে। এ নাটকের মূল চরিত্র দুর্গা সোরেন দলিত শ্রেণির হয়ে আওয়াজ তোলে, যা পৌঁছে যায় তথাকথিত সভ্য সমাজের ভিত্তি অবধি আর নাড়িয়ে দেয় যুগ যুগান্ত ধরে অভ্যাস করা বর্ণবিদ্বেষের শিকড়।
বিদ্বেষের হাত ধরে সভ্যতা যখন পেছন দিকে হাঁটতে শুরু করে, তখন ‘ওয়ান ফ্রাইডে মর্নিং ’ এর মত নাটকে ভর করে ‘দুর্গা’রা বুক ঠুকে মনে করিয়ে দিয়ে যায় প্রাচীন ইতিহাসের অমোঘ বাণী ; ‘বর্ণ কিন্তু জন্মসূত্রে লব্ধ নয়’। কর্মের ফলে অর্জিত সম্মানই হোক বেঁচে থাকার মূল পাথেয়।
নাটক জীবনের কথা বলে, নাটক সমাজ পরিবর্তনের কথা বলে, নাটক শ্রেণী সংগ্রামের সতীর্ণ হাতিয়ার। ১৭ দিনের এই উৎসবের ছোঁয়া লেগেছে জেলার সবখানেই। মিলনায়তনের বাইরেও উৎসবে ভরপুর। শুধু নাট্যকর্মী বা নাট্য অনুরাগী ও প্রেমী নয় সাংস্কৃতিক অন্য শাখায় যাদের বিচরণ তাদেরও মোহনা জেলা শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গণ। বিকেল গড়াতেই পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠে। নাটক শেষে দুই অভিনয় শিল্পীকে প্রদান করা হয় উৎসব স্মারক। অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন সঞ্চয়িতা বসু ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হারুন অর রশিদ।