মনিরুজ্জামান মনির : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে গেছে। পাঁচ দিনের এ উৎসবকে উপলক্ষ করে এবার জমে উঠেছে যশোরের বাজার।
শাড়ি কাপড়, তৈরি পোশাক ও কসমেটিক্সের বিক্রি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। বিক্রেতাদের প্রত্যাশা দশমী পর্যন্ত বেচা বিকি চলবে।
যশোরের এইচএমএম রোড, হাটচান্নি, চুড়িপট্টি, মুজিব সড়কসহ অন্যান্য দোকান ও বিপনী বিতানগুলো এবার ভিড় ছিল অন্য যে কোন বারের তুলনায় বেশি। বড় বাজারে এবার ঈদের মত ভিড় দেখেছেন ব্যবসায়ীরা। বেচাকেনা ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
এবার পূজায় মেয়েরা শাড়ি এবং থ্রি—পিস, লেহেঙ্গা এবং টপস কিনেছেন বেশি। আর লেদের পাঞ্জাবি বিকি হয়েছে বেশি। এছাড়াও ধুতি, শার্ট, টি—শার্ট, প্যান্ট বিক্রি হচ্ছে। শিশুদের পোশাকের ডিজাইনে যেন শেষ নেই।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, কাতান, সিল্ক, জর্জেট এবং এমব্রয়ডারি করা শাড়ির প্রতিও আগ্রহ রয়েছে ক্রেতাদের। এদিকে ইমিটেশনের দোকানগুলোতেও গয়না বিক্রির ধুম পড়েছে। নারীরা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিনছে গলার হার, চুড়ি এবং আংটিসহ নানা রকম অলঙ্কার।
যশোরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ মানুষের হাতেই ছিল শপিংব্যাগ। কেউ শাড়ি কিনেছেন, কেউ পাঞ্জাবি, কেউবা কিনেছেন জুতা।
বেনাপোল নাথপাড়ার রবিন কুমার পাল জানান, ‘পূজা উপলক্ষে পরিবারের জন্য প্রায় কেনা কাটা শেষ। গতবারের চেয়ে এবার অনেক বেশি কেনাকাটা করছি। আমাদের আশ্রমেও কাপড় কিনে দিয়েছি। আজ আমি নিজের জন্য প্যান্ট এবং শার্ট কিনেছি।’
চুড়ামনকাঠির সম্রাট জানান, স্ত্রী এবং মেয়েকে নিয়ে কেনাকাটা করছি। কিছু কিনেছি আরো কিনবো। মেয়ের জন্য সব কেনাকাটা শেষ। শুধু কসমেটিক্স এবং ইমিটেশনের গয়না বাকি আছে।
যশোর পুলিশ লাইনের সোহাগ কুমার দাস জানান, বাবা—মার জন্য কেনা শেষ। স্ত্রী এবং আমার জন্য কিনবো। পূজাতেই বেশি কেনাকাটা করা হয়। পরিবারের সকলে এক সাথে নতুন কাপড় ও গয়না পরে মা দুর্গার নিকট উপাসনা করবো।
<< আরও পড়ুন >> এসপির কড়া হুশিয়ারি : পূজায় ডিজে পার্টি হবে না
লোন আফিস পাড়ার শিউলী সরকার জানান, আমার ছেলেমেয়ে ২ জন। পরিবারের সবার আগে আমার সন্তানদের পূজা উপলক্ষে তাদের পছন্দ মতো কিনে দিয়েছি। তারপর শশুর এবং আমার বাবা—মাকে শাড়ি লুঙ্গি দিয়েছি। আজ আমার নিজের জন্য একটা শাড়ি কিনতে আসছি।
পরিবারের এবং আত্মীয় স্বজনদের দেওয়া শেষ। পূজা এ শহরেই করার ইচ্ছা আছে। আমার যশোরেই ভালো লাগে। যশোরে বিভিন্ন পূজা মন্দিরে গিয়ে মা দেবির নিকট প্রার্থনা করবো।
মডার্ন ক্লথ স্টোরের হারান মজুমদার জানান, এ বছর পূজায় কেনাবেচা বেশি। গতবারের তুলনায় ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। বেশি বিক্রি হচ্ছে থ্রি পিস আর শার্ট প্যান্টের পিস। ভারতের ভিসা জটিলতার কারণে এ বছর দেশে বেশি বেচাকেনার হচ্ছে। এতে আমরা লাভবান হচ্ছি।
যশোর সিট বিতানের ইবনে হাসান জানান, পূজা উপলক্ষে বিক্রি বেড়েছে। তারপরেও গতবার তুলনায় এবার সব কাপড়ের দাম অনেক বেশি। যার কারণে ক্রেতারা ঘুরছে বেশি।
যশোর বড়বাজারের নাসির কসমেটিক্সের নাসির হোসেন জানান, পূজা সামনে করে বেচাকেনা খুবই হচ্ছে। বেশি বিক্রি হচ্ছে ইমিটেশন গয়নার। পূজা চলাকালিন সময়েও অনেক বিক্রি হবে। কসমেটিক্সের জিনিস পূজা চলাকালে বেশি বিক্রি হয়।
মা বস্ত্রলয়ের আশিকুল আলম জানান, বেচাকেনা অনেক ভালো। শাড়ি বিক্রি হচ্ছে বেশি।
নজরুল এন্ড সন্স’র নাজমুল ইসলাম জানান, সারা বছরে যে শাড়ি বিক্রি হয়। পূজার ১০—১২ দিনে তার থেকে বেশি বিক্রি হয়। তবে এ বছর আশার চেয়ে বেশি শাড়ি বিক্রি হয়েছে। খুবই বেচাকেনা হচ্ছে।