বিশেষ প্রতিনিধি : আসন্ন দুর্গাপূজার সময় কোনো ডিজে পার্টি হবে না— শব্দ বাজি ব্যবহার করা যাবে না, বিষয়টি আগেই জানিয়েছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে কড়া হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
পূজা উপলক্ষে এদিন জেলা পুলিশ প্রধান প্রলয় কুমার জোয়ারদারের প্রেসব্রিফিং এ বিষয়টি আরো জোর দেয়া হয়েছে।
এসপি অফিসে ব্রিফিংকালে প্রলয় কুমার জোয়ারদার বলেন, আসন্ন দুর্গা পূজায় নিরাপত্তার কোনো অভাব হবে না। পুরোটা সময় থাকবে নিরাপত্তার চাদরে মোড়া। ধর্মীয় সংঘাত ও উস্কানির সুযোগ দেয়া হবে না।
অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে যশোরে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। পূজা নিয়ে কাউকে সম্প্রীতি নষ্ট করতে দেয়া হবে না। যশোরে সাম্প্রদায়িক সমস্যা তৈরি যেমন হবে না তেমনি সম্প্রীতি বজায় রাখতে সকলের সহযোগিতার প্রয়োজন হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধু পুলিশ বা বিজিবি, র্যাব ও প্রশাসনের পক্ষে সম্ভব না, সামাজিক অবস্থান ও সহমর্মিতার মাধ্যমে সম্মিলিত প্রয়াসে এই ঐক্য সম্প্রীতি ধরে রাখতে হবে। উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা সম্পন্ন হবে। এ বিষয়ে পুলিশ দপ্তর ও সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যশোর পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন সেটি পালন করতে বদ্ধপরিকর।
সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, জেলার ৭৩৩টি মণ্ডপের মধ্যে ইতোমধ্যে ৬শ মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। অন্যগুলোতে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ১হাজার ৪৯২ জন পোশাকধারী পুলিশ, ১০০ জন সাদাপোশাকে থাকবে। পুলিশের ৫০টি টহল টিম থাকবে।
মোটরসাইকেলে মোবাইল টিম থাকবে ২’শ টি একই সাথে থাকবে স্টাইকিং ফোর্স। জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ তো আছেই তাছাড়া জেলা পুলিশের ও উপজেলা পর্যায়ে থানায় কন্ট্রোল রুম থাকবে, ইউনিয়ন পর্যায়ে থাকবে বিট পুলিশের কন্ট্রোলরুম। বিট পুলিশের পক্ষ থেকে মণ্ডপগুলিতে পর্যবেক্ষণ থাকবে।
নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর তারা রাউন্ডে যাবে এবং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জেলাপুলিশের সাথে কোঅর্ডিনেশন থাকবে, সমস্ত প্রক্রিয়াটিও কোঅর্ডিনেশনের মধ্যে থাকবে। সাধারণ পূজামণ্ডপে দায়িত্বে থাকবে আনসার বাহিনীর সদস্যরা এছাড়া ১৩৭টি গুরুত্বপূর্ণ বা অধিক গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।
এছাড়াও বিজিবি, র্যাবের টহল থাকবে। নিরাপত্তার চাদরে যশোরকে মুড়ে দেয়া হয়েছে। কাউকে সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে দেয়া হবে না। আমাদের ডিপার্টমেন্ট ও সরকারের পক্ষ থেকে সর্ব প্রকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, আমরা প্রতিটি স্থানে ২টি কমিটি করেছি। একটি হলো সম্প্রীতি কমিটি, যেখানে আলেম ওলামাসহ সব ধর্মের ও মতের মানুষের সম্মিলিত অবস্থান আছে। অন্যটি হলো স্বেচ্ছা সেবক কমিটি, সেখানে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয় রয়েছে।
এর আগে পূজা উদযাপন কমিটিকে এর অগেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। উৎসবমুখর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হবে। এখানে কাউকে অপরাধ করার সুযোগ দেয়া হবে না। কঠোর হস্তে সব কিছু দমন করা হবে।
পূজা উপলক্ষে পুরো যশোর থাকবে নিরাপত্তার চাদরে। প্রতিটি মণ্ডপে আগে থেকেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, এখন সবগুলোকেই সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
ধর্মীয় কার্যকলাপ বাধাগ্রস্থ যাতে না হয় সেদিকে সকলের খেয়াল রাখার আহ্বান জানিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, পূজার সময় ডিজে পার্টি না হয় সে দিকে খেয়াল রাখবে পুলিশ।
শব্দবাজি ব্যবহার করে পরিবেশ নষ্ট হতে দেয়া হবে না। যশোর পুলিশের পক্ষ থেকে ডিজে পার্টি ও বাজি উৎসব নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। আরও জানানো হয়েছে, যার যার ধর্ম সে পালন করবে।
উৎসব মুখর পরিবেশে দুর্গা পূজা সম্পন্ন হবে। শান্তি ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা হবে। এ সময় জেলা পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার সকলের সহযোগিতা চান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্তি পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন, নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক ডিআইও—১ মো. মামুন খান, ডিবির ওসি রুপণ কুমারসহ পুলিশের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তারা।