৯ই মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জিততে জিততে হারলো বাংলাদেশ

সমাজের কথা ডেস্ক : শ্রীলংকার পাহাড়সম স্কোরের জবাবে চূড়ান্ত ব্যর্থ বাংলাদেশের টপ অর্ডার। ৬৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ফিকে হয়ে আসে জয়ের আশা। তবে বাংলাদেশ দলকে প্রথম আশার আলো দেখান অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ব্যাটে ঝড় তুলে হাফ সেঞ্চুরির পরপর তিনি ফিরলেও বাংলাদেশকে হতোদ্যম হতে দেননি নবাগত জাকের আলি। তবে বলের দ্বিগুণ গতিতে ৬৪ রানের ঝলমলে ইনিংস খেললেও দলের হার এড়াতে পারেননি তিনি। ৩ রানের হার দিয়ে টি—টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ।

শেষ ২ ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ২৭ রান। ১৯তম ওভারে ১৫ রান তুলে শেষ ওভারে জয়ের সমীকরণ ১২ রানে নিয়ে আসেন জাকের। দাসুন শানাকার করা শেষ ওভারের প্রথম বলেই আউট রিশাদ হোসেন। এরপর একটি ওয়াইড হওয়ার পর জাকেরকে স্ট্রাইক দেন তাসকিন আহমেদ। তবে বাংলাদেশকে হতাশ করে তৃতীয় বলে আউট হন তিনি। চতুর্থ বলে চার মেরে জয়ের সমীকরণ সহজ করে দেন শরিফুল। তবে শেষ ২ বলে প্রয়োজনীয় ৬ রান করতে পারেননি তারা। শেষ ২ বলে ২ রান হওয়ায় ৩ রানের হার দেখে টাইগাররা।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২০৭ রানের পাহাড়সম লক্ষ্যে একদম শুরুতেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। দলের সঙ্গে কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই আউট হয়ে যান লিটন দাস। ২১ রানে ফিরে যান সৌম্য সরকারও। দলের বিপদে বাড়িয়ে ৩০ রানে বিদায় নেন তাওহীদ হৃদয়ও। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ২৮ বলে ৩৮ রানের জুটি গড়েন এই দুজন। তবে ৬৮ রানের মাথায় মাথিরা পাথিরানার গতি সামলাতে না পেরে শান্ত ফিরলে বাংলাদেশের বিপদ আরও ঘনীভূত হয়।

তবে বাংলাদেশকে জয়ের ক্ষীণ আশা দেখাতে থাকেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। চার—ছক্কায় লংকান বোলারদের আছড়ে ফেলতে থাকেন গ্যালারিতে। জাকেরের সঙ্গে ২৭ বলে ৪৭ রানের জুটিতে সিংহভাগ রানই মাহমুদউল্লাহর। ২৭ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন মি. সাইলেন্ট কিলার। তবে ফিফটি পূর্ণ করার পর ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি। মহেশ থিকসানার বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ধরা পড়েন বাউন্ডারির পাশে। ৩১ বলে ২টি চার ও ৪ ছক্কায় দলীয় ১১৫ রানের মাথায় ফেরেন তিনি। জয়ের জন্য ৪০ বলে তখনো দরকার ৯২ রান।

মাহমুদউল্লাহ আউট হওয়ার পরই জেগে উঠলেন ‘ঘুমন্ত সিংহ’ জাকের। আরেক পাশে মেহেদী হাসান চুপচাপ থাকলেও একের পর এক ছক্কা হাঁকাতে শুরু করেন জাকের। ষষ্ঠ উইকেটে মেহেদীর সঙ্গে প্রথম ৫০ রানের জুটি গড়েন মাত্র ২১ বলে, যেখানে জাকেরের একার রান ৩৮। ২৫ বলে নিজের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন এই ব্যাটার। যেখানে ছক্কাই ছিল ৬টি। এই দুজনের ৬৫ রানের জুটি ভাঙে দলীয় ১৮০ রানে মেহেদী ফিরলে। ১১ বলে ১৬ রান করে আউট হন মেহেদী।

তবে আরেক পাশে আশার আলো হয়ে জ্বলতে থাকেন জাকের। রিশাদ ব্যাটিংয়ে নড়বড়ে, তাই নিজের কাছেই স্ট্রাইক রাখছিলেন জাকের। তবে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েও শেষ ওভারে আশা ভঙ্গ হয় বাংলাদেশের। প্রথম বলে রিশাদের বিদায়ের পর তৃতীয় বলে বিদায় নেন জাকেরও। ৩৪ বলে স্ট্রাইকরেট ২০০ রেখে ৬৮ রান করে আউট হন তিনি। শেষ পর্যন্ত তাসকিন আহমেদ আর শরিফুল ইসলাম জেতাতে পারেননি দলকে। ৩ রানে হেরে ৩ ম্যাচের সিরিজে পিছিয়ে পড়ে ১—০ ব্যবধানে।

এর আগে, নির্ধারিত ২০ ওভারে ২০৬ রান তোলে শ্রীলংকা। শুরুতে অবশ্য শ্রীলংকাকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই লংকান ওপেনার আবিষ্কা ফার্নান্দোকে ফিরিয়ে দেন শরিফুল। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কামিন্দু মেন্ডিসকে নিয়ে ভালোই এগোতে থাকেন কুশল মেন্ডিস। পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে আঘাত হানেন তাসকিন। লংকানদের দলীয় ৩৭ রানের মাথায় সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কামিন্দু। ১৪ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারে ১৯ রান করেন তিনি।

পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৪৫ রান করে লংকানরা। দুই উইকেট হারানোর পর দারুণ স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে থাকেন কুশল ও সাদিরা সামারাবিক্রামা। বিশেষ করে স্পিনার মেহেদী হাসানের বিপক্ষে একটু বেশিই সাবলীল ছিলেন তারা। ১০ ওভার শেষে ওই ২ উইকেট হারিয়েই লংকানদের রান হয় ৭৯। ১২তম ওভার থেকে বাংলাদেশের ওপর ঝড় বইয়ে দেওয়া শুরু করেন লংকানরা। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের করা ওই ওভারে ১৮ রান তুলে নেন তারা। এরই মধ্যে ২৮ বলে নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন কুশল। টি—টোয়েন্টিতে এটি তার ১৩তম অর্ধশতক। যৌথভাবে যেটি শ্রীলংকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

শরিফুল ইসলামের করা ১৩তম ওভারেও চার—ছক্কার ফুলঝুড়িতে ২১ রান তুলে নেয় লংকানরা। ১৫তম ওভারে ১৩৩ রানের মাথায় শেষ পর্যন্ত কুশলকে থামান রিশাদ। তবে ততক্ষণে ৫৯ রান করে ফেলেছেন তিনি। কুশল ফিরলেও লংকানদের চার—ছক্কা থামেনি। তাসকিন—মোস্তাফিজদের বল একের পর এক বাউন্ডারিছাড়া করতে থাকেন সামারাবিক্রামা ও চারিথ আসালঙ্কা। ৩২ বলে অপরাজিত ৭৩ রানের জুটি গড়েন এই দুজন। লংকানরা শেষ ১০ ওভারে তোলে ১২৭ রান। ৪৮ বলে ৬১ রান করে অপরাজিত থাকেন সামারাবিক্রামা, আরেক পাশে ২১ বলে ৪৪ রান করে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক আসালঙ্কা। তাতে ৩ উইকেট হারানো লংকানদের ইনিংস থামে ২০৬ রানে।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝড় বইয়ে গেছে শরিফুল ইসলামের ওপর দিয়ে। ১টি উইকেট পেলেও ৪ ওভারে ৪৭ রান দিয়েছেন বিপিএলে সর্বাধিক উইকেটশিকারী এই বোলার। ইকোনমি দশের ওপরই ছিল তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসানদের। ৪ ওভারে ৩২ রানের বিনিময়ে ১ উইকেট শিকার করা রিশাদই ছিলেন বাংলাদেশ শিবিরে সবচেয়ে সফল।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram