৯ই মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
কোন নেক আমল আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বেশী প্রিয়
62 বার পঠিত

সমাজের কথা ডেস্ক : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাজিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, কোন নেক আমল আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বেশী প্রিয়? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে নামায সময়মতো পড়া হয়। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কোন কাজ সবচেয়ে বেশী প্রিয়? তিনি বললেন, মাতা—পিতার সাথে সুন্দর আচরণ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরপর তিনি ফরমালেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।" —বুখারী ও মুসলিম

আরও পড়তে পারেন : মাতা—পিতার খিদমতের পার্থিব পুরস্কার

নামাযের গুরুত্ব এবং ফযিলত সম্পর্কে কোনো মুসলমান অনবহিত নন। তারপরও নামাযের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাতের সাথে সাথে প্রিয় নবী আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে নেক আমলের তাকিদ দিয়েছেন, দীনে তার কি ধরনের গুরুত্ব হতে পারে। মাতা—পিতা এবং সন্তানের মধ্যে তো সম্পর্ক বিদ্যমান। তাদের মধ্যে নেক আচরণ ও ভালোবাসার সম্পর্ক তো রক্তের সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ব্যাপার।

প্রতিটি মুমিন মাতা—পিতাকে ভালোবেসেই থাকে এবং যতদূর সম্ভব মন ও অন্তর দিয়ে তাঁদের খিদমত করে। কিন্তু প্রিয় নবী আলাইহি ওয়াসাল্লামের তাকিদের অর্থ হলো এ সম্পর্কে শুধু বংশীয় এবং ইহকালের সম্পর্কেই নয়। বরং এটা একটা দীনি ব্যাপারও বটে। আল্লাহর দীন এবং আল্লাহর আনুগত্যের দাবীই হলো মাতা—পিতার সাথে নেক বা সুন্দর আচরণ করা।

আরও পড়তে পারেন : “মাতা—পিতা বেহেশত এবং মাতা—পিতা দোযখ”

আল্লাহ ও রাসূল আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ হলো যে, তাঁদের অনুগত থাকা এবং খিদমত করা। তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং বিভিন্নভাবে খুশী রাখার চেষ্টা করা। কোনো মুসলমান যদি মাতা—পিতার অনুগত না হয় তাহলে সে আল্লাহ ও রাসূল আলাইহি ওয়াসাল্লামেরও অনুগত হয় না। সে শুধু বংশীয় ও ইহকালীন অপরাধীই নয় — বরং সে আল্লাহর নিকটও অপরাধী। আল্লাহর নিকট তাকে জবাবদিহিও করতে হবে।

“হযরত আমর ইবনুল আছ রাজিয়াল্লাহু আনহুর পুত্র হযরত আবদুল্লাহ রাজিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, এক ব্যক্তি প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খিদমতে হাজির হয়ে বলতে লাগলো, আমি আপনার নিকট হিজরত ও জিহাদের বাইয়াত করছি এবং আল্লাহর কাছে তার প্রতিদান চাচ্ছি।

আরও পড়তে পারেন : আল্লাহর পর সবচেয়ে বড় অধিকার কার

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মাতা—পিতার মধ্যে কেউ জীবিত আছেন কি ? সে বললো, জ্বী হাঁ। বরং আল্লাহর শোকর যে, উভয়েই জীবিত আছেন। তিনি বললেন, তুমি কি বাস্তবিকই আল্লাহর নিকট নিজের হিজরত ও জিহাদের প্রতিদান চাও ? সে বললো, জ্বী হাঁ। আল্লাহর নিকট প্রতিদান চাই। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, তাহলে মাতা—পিতার নিকট ফিরে যাও এবং তাঁদের সাথে সুন্দর আচরণ করো।”—মুসলিম

দীনে হিজরত ও জিহাদের যে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তা কে অস্বীকার করতে পারে ? এ সত্ত্বেও যদি মাতা—পিতা বার্ধক্য, দুর্বলতা অথবা কোনো মাজুরীর কারণে সন্তানের সাহায্য ও খিদমতের মুখাপেক্ষী হন, তাহলে সন্তান তাঁদের খিদমত এবং আরাম প্রদান করে আল্লাহর প্রতিদানের আকাঙ্ক্ষী হবে। আর তাতেই রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি। এ ধরনের অসহায় অবস্থায় ইসলামে মাতা—পিতার সান্নিধ্যে থেকে খিদমত করা হিজরত ও জিহাদের মতো উত্তম আমলের চেয়েও অতি উত্তম কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

হযরত আবদুল্লাহ বিন আমর রাজিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি মাতা—পিতাকে কাঁদায়ে রেখে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খিদমতে হিজরতের বাইয়াত করার জন্য উপস্থিত হলো। এ সময় হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “মাতা—পিতার নিকট ফিরে যাও এবং তাঁদেরকে সেভাবে খুশী করে এসো যেভাবে কাঁদিয়ে এসেছো।”—আবু দাউদ

তিনি আরো বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট জিহাদে শরীক হওয়ার উদ্দেশ্যে হাজির হলো। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মাতা—পিতা জীবিত আছেন? সে বললো, জ্বী হাঁ। আল্লাহর শোকর যে, জীবিত আছেন। তিনি বললেন, যাও, তাঁদের খিদমত করতে থাকো। এটাই জিহাদ। —মুসলিম, আবু দাউদ

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram