সমাজের কথা ডেস্ক : রাজধানীর বেইলি রোডে ভবনের আগুনে নিহত সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুন ওরফে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর মরদেহ ফিরে পেয়েছেন তার বাবা সবুজ শেখ। দীর্ঘ ১১ দিন পর আজ সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে মরদেহ বুঝে নেন তিনি।
এর আগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক ল্যাবে বৃষ্টি খাতুনের পরিচয় শনাক্ত হয়। গতকাল রবিবার রাতে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের ডিআইজি এ কে এম নাহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ পেয়ে সবুজ শেখ বলেন, ‘সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আমিই তার বাবা। আল্লাহর কাছে হাজার হাজার লাখো কোটি শুকরিয়া। আজ মরদেহ পেয়েছি, তাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাব। সেখানেই জানাজা দিয়ে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।’
হিন্দু—মুসলিম নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল, এ বিষয়ে সবুজ শেখ বলেন, ‘দেখেন, হিন্দুদের অনুষ্ঠানে গেলেই কি মানুষ হিন্দু হয়ে যায়? অনেকেই তো হিন্দুদের অনুষ্ঠানে যান, তাই বলে কি যিনি অনুষ্ঠানে যাবেন, তিনি হিন্দু হয়ে গেছেন?’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে বৃষ্টি খাতুনের পরিচয় সনাক্ত করা হয়। আজ সোমবার দুপুর আড়াইটায় মরদেহটি তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
মরদেহ হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন রমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান। বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্স যোগে মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন বৃষ্টি খাতুনের বাবা সবুজ শেখ।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৬ জনের মধ্যে ছিলেন বৃষ্টি। বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে অভিশ্রুতি নামেই পরিচিত ছিলেন বৃষ্টি। সেই নামে তিনি সাংবাদিকতা করতেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবং অভিশ্রুতি নামে পরিচয় দেওয়ার কারণে তার লাশ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। মৃত্যুর পর রমনা কালীমন্দিরের সভাপতি উৎপল সরকার ও কুষ্টিয়া থেকে এসে তার বাবা—মা মরদেহ দাবি করেন। পরে পুলিশ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। নমুনা নেওয়ার ১১ দিন পর ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল জানা যায় গতকাল।