নিজস্ব প্রতিবেদক : চৌগাছার বহুলালোচিত মাকাপুর গ্রামের হায়দার আলীকে হত্যা মামলাটি সিআইডি পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছে আদালত। গত ৩ ডিসেম্বর চৌগাছা থানার দেয়া প্রতিবেদনের উপর শুনানি শেষে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহম্মেদ এ আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইজীবী কাজী সেলিম রেজা ময়না।
গত ২২ নভেম্বর হায়দার আলীকে হত্যার অভিযোগে ব্যরিস্টার ছেলেসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেছিলেন স্ত্রী লতিফা হায়দার।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, আসামি লন্ডল প্রবাসী ব্যারিস্টার মতুর্জা রাসেল ছেলে ও অপর আসামিরা আত্মীয়। হায়দার আলী পৈত্রিক ও ক্রয় সূত্রে সাড়ে ১৩ একর জমির মালিক ছিলেন। এই জমি আসামি মতুর্জা রাসেল তার নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়ার জন্য তার পিতার উপর মানসিক চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। রাসেল প্রবাসী হওয়ায় আসামি মোস্তাফিজুর রহমানা বাবুলের মাধ্যমে জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়ার জন্য চাপ অব্যাহত রাখে।
এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর চৌগাছা থানায় একটি জিডি করেন। চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাসেল বিদেশ থেকে দেশে আসে। এরপর সে তার পিতাকে মায়ের হেফাজত থেকে নিজের জিম্মায় নেয়ার জন্য আদালতে মামলা করে। আাদালত আসামি মতুর্জার হেফাজতে দিয়ে দেয়। এরপর আসামিরা মতুর্জার নামে জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়ার জন্য চাপ দেয়। জমি রেজিস্ট্রি করতে ব্যর্থ হয়ে আসামিরা হায়দার আলীকে মৃত্যু হয় এমন ওষুধ সেবন করিয়ে অসুস্থ করে ফেলে।
এরপর চলতি বছরের ১ অক্টোবর যশোর ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করে ৮ অক্টোবর রাতে ছাড়পত্র নিয়ে নেয় আসামিরা। পরবর্তীতে মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলের হেফাজতে মৃত্যু নিশ্চিত করে গভীর রাতে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তা গ্রহণ করেনি থানা কতৃর্পক্ষ। এরমাঝে আসামিরা তড়িঘড়ি করে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ পরিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করে। মরহুম হায়দার আলীর মৃত্যু সনদ ও অন্যান্য কাগজপত্র জোগাড় করে হায়দার আলীর স্ত্রী লতিফা হায়দার গত ১১ নভেম্বর লন্ডল প্রবাসী ব্যারিস্টার ছেলে মতুর্জা রাসেলসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন।
আসামিরা হলো, মরহুম হায়দার আলীর লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টার ছেলে একেএম মতুর্জা রাসেল, ছুটিপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার মৃত বজলুর রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে বিশাল, পুড়োপাড়া গ্রামের মৃত মঈনুদ্দিনের স্ত্রী শাহিদা, ছেলে হাসিবুল, বাদে খানপুর গ্রামের মৃত তরিকুল ইসলামের ছেলে রাজীব, মৃত মহতাব উদ্দিনের স্ত্রী হামিদা, ছেলে মাসুম, মজনু ও মাকাপুর গ্রামের মৃত মগরেব আলীর ছেলে শহিদুল।
বিচারক অভিযোগটি গ্রহণ করে এ ঘটনায় চৌগাছা থানায় কোন মামলা হয়েছে কিনা, হলে অগ্রগতিসহ প্রতিবেদন আকারে আদালতে জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছিলেন ওসিকে। চৌগাছা থানার দেয়া প্রতিবেদনের উপর শুনানি শেষে গত ৩ ডিসেম্বর বিচারক সিআইডি পুলিশকে অভিযোগের তদন্ত করে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন।