সমাজের কথা ডেস্ক : অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের শ্রী শ্রী রশিক রায় জিউ মন্দির ও এর আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি করেছে সদর উপজেলা প্রশাসন।
গত বুধবার ভোর ৬টা থেকে আগামী ২৫ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত মন্দির ও আশপাশের এলাকায় এ আদেশ জারি করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন।
ইউএনও বলেন, ‘সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের শ্রী শ্রী রশিক রায় জিউ মন্দির এলাকায় স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বী ও ইসকন অনুসারীদের দ্বন্দ্বের জেরে ওই মন্দির ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে।’
তিনি বলেন, ওই ইউনিয়নের ভাতগাঁও গ্রামের শ্রী শ্রী রশিক রায় জিউ মন্দিরের ৫৭ এক ৪৯ শতক জমি দখল করাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মের সনাতন ও ইসকন পন্থীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছে।
২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর মন্দিরে দুর্গাপূজা নিয়ে ইসকন ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়। এ সময় ইসকন ভক্তদের হামলায় ফুলবাবু নামে একজন সনাতন ধর্ম অনুসারী নিহত হন।
সেই থেকে ওই মন্দিরে দুর্গাপূজার সময় স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে আসছে। বিভিন্ন পূজার সময় এলে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের মিটিংয়ে রশিক রায় জিউ মন্দিরের বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হলেও দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে সমস্যার সমাধান হয়নি।
ইউএনও আরও বলেন, এ বিরোধের জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটেছে। এ বছর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, তাই ১৪৪ ধারা জারির আদেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্গাপূজা শেষ হলে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হবে, পাশাপাশি সমাধানেরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।
শ্রী শ্রী রশিক রায় জিউ মন্দিরের সভাপতি ভবেশ চন্দ্র রায় বলেন, রশিক রায় জিউ মন্দিরের পুরো জমিটি সনাতন ধর্মের, কিন্তু এই জমিটি জোরপূর্বক ইসকন পন্থীরা দখল করতে চাইলে সংঘর্ষে আমাদের একজন নিহত হন এবং মন্দিরটি ইসকন পন্থীরা দখল করে নিয়ে যায়।
বিষয়টি নিয়ে নিন্ম ও উচ্চ আদালতে মামলায় আমরা রায় পেয়েছি। এরপর থেকে বিষয়টি সমাধান না করে সংঘর্ষের আশঙ্কায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে আসছে। আমাদের দাবি মন্দিরটি আমাদের ফেরত দেওয়া হোক।
ইসকন পন্থী সুপেন্দ্র নাথ রায় বলেন, মন্দিরের সম্পত্তি আমাদের অর্থাৎ ইসকন পন্থীদের, কিন্তু সনাতন পন্থীরা এই জমিটি তাদের দাবি করে আসছে। তারা আমাদের মন্দিরে জোর করে দুর্গাপূজা করতে চায়।
এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। আইনের মাধ্যমে যেটি সমাধান হবে আমরা মেনে নিব।