সাইফুল ইসলাম : রমজানকে সামনে নিয়ে ইফতার সামগ্রীর দাম বাড়াতে এবার কৌশলী হয়েছেন যশোরের ব্যবসায়ীরা। রাতারাতি না করে ধারাবাহিকভাবে একটু একটু করে দাম বাড়ানো হয়েছে। ফলে একমাস পূর্বের দামের সাথে বর্তমান বাজার দরের বিস্তর ফারাক।
গতকাল সোমবার শহরের বড় বাজার ছিল ক্রেতার ভিড়ে ঠাসা। বেশিরভাগ ক্রেতা ব্যস্ত ছিলেন ইফতার সামগ্রী কেনাকাটায়। সোমবার বড় বাজারে দেখা গেছে, ইফতার সামগ্রী তৈরির অন্যতম উপাদান বেসন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা। যা কিছু দিন আগেও ছিলো ৭০ থেকে ৮০ টাকার ভিতর। ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি, এক সপ্তাহ আগেও কেজিতে ১০ টাকা কম ছিল। চিড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে, যা কিছদিন পূর্বে ৫০—৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খেসারির ডাল ১২০ টাকা, মুড়ি লুজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি। চিনি প্রতি কেজি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা।
তবে দাম বৃদ্ধিতে লাগাল ছাড়িয়েছে কলা। এক সপ্তাহ আগের দামের চেয়ে কলার দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। একইভাবে লেবু, শশা, বেগুনের দাম হঠাৎ বেড়েছে। ভালোমানের কলা বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ১২০ টাকা ছড়া। যা গত দু’দিন আগে ছিল ২৫ থেকে ৪০ টাকা। লেবু প্রতি হালি ৩০ থেকে ৬০ টাকা। বিদেশি সব ধরনের ফলে কেজিতে বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। ১৫০ টাকা কেজি কমলা লেবু বেড়ে হয়েছে ২২০ টাকা, ১৮০ টাকার আঙ্গুর বেড়ে হয়েছে ২৯০ টাকা, অপেল বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, মালটা ৩৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি এবার খেজুরের দাম। মান সম্মত খেজুর এক হাজার টাকা কেজি দরের নিচে নেই। সর্বনিন্মমানের খেজুরও ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
৩২শ’ টাকা কেজি দরের খেজুরও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। দাবাজ খেজুরের প্রতি কেজি ৪৬০ থেকে ৫০০ টাকা, খালাস ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা, কালমী ৯৫০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ১০৫০ টাকা, আজুয়া ১৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে শহরের আর এন রোড এলাকার রাফিউল ইসলাম বলেন, বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়তি। বিশেষ করে খেজুরের দাম। এছাড়াও ইফতারি নির্ভর প্রতিটি পণ্য বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
অপর ক্রেতা কিবরিয়া শেখ বলেন, রমজানে অন্যদেশের ব্যবসায়ীরা যেখানে জিনিসের দাম কমায় আর আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ায়। যেই কলা এক সপ্তাহ আগে বাজারে বিক্রি হত ৩০ টাকা ছড়িতে আজ তাই বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা।
বড় বাজারের মুদী দোকানি জালাল স্টোরের জালাল হোসেন বলেন, এবারের রমজান বলে কথা না, সবকিছু জিনিসপাতি দাম আগে থেকেই বাড়তি।
খেজুর ব্যবসায়ী সজল রহমান বলেন, গত দু’দিন আগে আড়ৎ থেকে যে দামে খেজুর কিনেছি, এখন দাম বাড়তি। এ কারণে আমাদের কোন উপায় নেই। আমরা যে দামে কিনি তার থেকে একটু বেশিতে খুচরা বিক্রি করে থাকি। মূল্যনিয়ন্ত্রণ করে আমদানীকারক ও পাইকার ব্যবসায়ীরা।