১০ই মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বেপরোয়া কিশোর গ্যাং
66 বার পঠিত

সারাদেশে কিশোর অপরাধ বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। চাকু মেরে খুন, ছিনতাই, ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের মত ঘটনা ঘটেই চলেছে। গত জানুয়ারি মাসে যশোরে কিশোর অপরাধীদের হাতে একাধিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও ভাবিয়ে তুলছে। অভিভাবকরাও স্বভাবতই উদ্বিগ্ন, আতঙ্কিত ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। কি জানি, যদি নিজের সন্তানটিও কোনো না কোনোভাবে জড়িয়ে পড়ে কিশোর অপরাধী দলের সঙ্গে!

বরগুনায় প্রকাশ্য দিবালোকে জনসমক্ষে নয়ন বন্ড গ্রুপ কর্তৃক রিফাতকে রামদা দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা, রাজধানীর দিলু রোডে বিয়ের আসরে ঢুকে বখাটে কর্তৃক কনের বাবাকে হত্যা অথবা ক্রিকেট খেলাসহ নানা তুচ্ছ কারণে এক কিশোর গ্রুপ কর্তৃক আরেক কিশোর গ্রুপের কিশোর হত্যার ঘটনা বাড়ছে দিন দিন। এটি একটি দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশের জন্য আদৌ শুভ লক্ষণ নয়।

নানা কারণে দেশে কিশোর অপরাধ বাড়ছে। যশোর শহরেই রয়েছে কয়েকটি গ্রুপ। সেগুলোর নামেরও রয়েছে নানা বাহার। অধিকাংশই কিশোর বয়সী—নাইন—টেন থেকে একাদশ—দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। এসব গ্রুপের আবার গ্যাং লিডারও রয়েছে, যারা অপেক্ষাকৃত অল্প শিক্ষিত এবং মস্তান শ্রেণির। অধিকাংশই ফেসবুক, ইন্টারনেটে আসক্ত, মাদকাসক্ত, ছোটখাটো ছিনতাই—রাহাজানির সঙ্গে যুক্ত। পুলিশের খাতায় নাম লেখানো উচ্ছৃঙ্খল বিপথগামী সন্তান।

এক গ্রুপের সঙ্গে অন্য গ্রুপের সম্পর্ক মোটেও ভালো নয়— প্রধানত এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে। ফলে মারামারি, হানাহানি, খুনোখুনি তদুপরি প্রতিশোধ স্পৃহা লেগেই থাকে। এদের পেছনে গডফাদার থাকাও বিচিত্র নয়।

কিশোর—তরুণদের এভাবে বখে যাওয়া, দলাদলি, গ্রুপিং—লবিং, পাড়া—মহল¬ায় আধিপত্য বিস্তার, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা ইত্যাদিকে বলা হয় ‘গ্যাং কালচার।’ আইনের পরিভাষায় জুভেনাইল সাবকালচার। এসব নাকি নগরায়ণের সঙ্গে সম্পর্কিত। এরা প্রায়ই তুমুল হর্ন বাজিয়ে তীব্র গতিতে রাজপথ দাপিয়ে বেড়ায় হোন্ডায়, সমবয়সী মেয়েদের সকাল—বিকেল উত্ত্যক্ত করে, ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেয়, মোবাইলে অশ¬ীল ছবি ধারণ করে ব¬্যাকমেইল করে, খেলার মাঠে হামলা চালায় প্রতিপক্ষের ওপর, সর্বোপরি ছিনতাই—চাঁদাবাজি—মাদক তো আছেই।

কিশোরদের এসব অপরাধমূলক কর্মকাে—র জন্য শুধু মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ফেসবুক, ইন্টারনেট ইত্যাদিকে দায়ী করা যাবে না। শুধু থানা—পুলিশ দিয়েও হবে না। এক্ষেত্রে সবিশেষ গুরুদায়িত্ব রয়েছে সমাজ, পরিবার, শিক্ষক ও অভিভাবকদের, বিশেষ করে মা—বাবা, ভাইবোনের। খেলাধুলা কিংবা পার্টির ছলে ছেলেটি কোথায় যায়, কী করে, কাদের সঙ্গে মেশে তা নিয়মিত রাখতে হবে নজরদারিতে।

পাড়া—মহল¬ার মুরব্বিরাও এক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারেন। যথাযথ স্নেহ—ভালোবাসা ও আন্তরিকতা দিয়ে সন্তানদের বোঝালে বিপথগামী হওয়া থেকে রক্ষা পেতেও পারে কিশোর প্রজন্ম।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram