২রা মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জনসংখ্যা ও জন্মনিয়ন্ত্রণ
61 বার পঠিত

বিগত কয়েক মাস ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর তীব্র ঘাটতির খবর পত্রিকায় এসেছে। শুধু সামগ্রী প্রাপ্তিতেই কি ঘাটতি? জন্মনিয়ন্ত্রণে সচেতনতা কিংবা উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রমও এখন আর প্রত্যাশিতভাবে জোরদার নয়। এ অবস্থা কেন? জনভারাক্রান্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পরিচিতি রয়েছে বিশ্বে। আমরা জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করার গালভরা বুলি আউড়ে থাকি। কিন্তু আসলেই আমরা কতটা দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে পেরেছি, সে হিসাব নেওয়া ও পর্যালোচনা করার সময় এসেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে জনস্যংখা যেন প্রতিবন্ধক না হয়ে ওঠে, সে বিষয়ে অবশ্যই বিশেষ নজর দিতে হবে।

স্বাধীনতার অব্যবহিত পরই জনসংখ্যাকে এক নম্বর সমস্যা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল দেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়। অথচ বর্তমান প্রশাসনের কাছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি বড় সমস্যা নয় বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। দেশের অনেক মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩৬ শতাংশ শিশু খর্বকায়। এর সঙ্গে প্রতি বছর যুক্ত হচ্ছে বিপুলসংখ্যক মানুষ। জনসংখ্যার এ চাপ পড়ছে ক্রমাগত সমাজ ও অর্থনীতিতে।

আবাসন, পরিবহনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা দিচ্ছে সংকট। বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশ ও জনস্বার্থে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ এত বেশি যে, মানসম্পন্ন এবং প্রয়োজনীয় সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জনসংখ্যার এই সমস্যাকে যদি পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয় কিংবা উপেক্ষা করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও জটিল ও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। বর্তমানে চলমান হারে জনসংখ্যা বাড়লে ২০৪১ সালে দেশের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ২১ কোটি ৮৪ লাখে— এমনটাই শঙ্কা।

অথচ লক্ষণীয় জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার খুব একটা বাড়েনি। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর প্রতিবছর জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে। বাস্তবে এর সুফল কোথায়? মাঠপর্যায়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর পর্যাপ্ত সরবরাহ এবং চাহিদা মোতাবেক সক্ষম দম্পতির হাতে তা পৌঁছানো যাচ্ছে না। জনবলই এর একমাত্র কারণ, নাকি পরিকল্পনা ও আন্তরিকতায় গলদ আছে?

জনসংখ্যাকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিন্তা করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও সহযোগিতার মনোভাব গ্রহণ না করলে শুধু বোঝা নয়, বিপদ হিসেবেও দেখা দেবে ভবিষ্যতে। বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করে ১ হাজার ১০০ মানুষ। জনঘনত্বে এটি ভারতের চেয়ে ৪ গুণ আর চীনের চেয়ে ৮ গুণ বেশি। সেজন্য জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের চিন্তা খুব গুরুত্বের সঙ্গে করা আবশ্যক। একটি সুখী, শান্তিপূর্ণ জীবনই সবার কাম্য।

জীবনমান বাড়াতে হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা জরুরি। দেশে বর্তমানে কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে বহু লোক বেকার। তার ওপর যদি জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে, তাহলে এই চাপ কিভাবে সামলাবে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র? পরিবার পরিকল্পনা সংস্থার দুর্নীতি শক্ত হাতে দমন করতে হবে। একই সঙ্গে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর ঘাটতি জরুরি ভিত্তিতে দূর করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram