পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : খুলনার পাইকগাছায় দুই সন্তানের জননীকে হাত, পা বেঁধে রেখে মুখে ও চোখে সুপার গ্লু আঠা লাগিয়ে ধর্ষণ ও পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। মুমূষুর্ অবস্থায় ওই গৃহবধুকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের উর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এ ঘটনায় থানায় এখনো পর্যন্ত লিখিত কোন অভিযোগ হয়নি। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনসহ এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটকও করা সম্ভব হয়নি। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ উপজেলার রাড়–লী গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার দিন রোববার রাতে গৃহবধূ একাই বাড়িতে ছিলেন। স্বামী প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে গিয়েছিলেন। এ সুযোগে গভীর রাতে কতিপয় দুবৃর্ত্ত একতলা ভবনের ছাদের সিঁড়ি ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে ওই গৃহবধূকে হাত—পা বেঁধে রেখে চোখে ও মুখে সুপার গ্লু আঠা লাগিয়ে ধর্ষণ ও পাশবিক নির্যাতন করে পালিয়ে যায়।
<<আরও পড়তে পারেন>> মা—মেয়ের মাদকের কারবার : ঝাড়– মিছিল
পরে আশে পাশের লোকজন টের পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় এবং সিঁড়ি ঘর দিয়ে ভিতরে ঢুকে গৃহবধূকে মুমূষুর্ অবস্থায় উদ্ধার করে। উদ্ধার করার সময় গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায় এবং রক্তক্ষরণ হয়। সকালে গৃহবধূকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি’তে ভর্তি করা হয়। জ্ঞান ফিরলেও এখনো কোন কথা বলছে না বলে গৃহবধূর স্বামী জানান।
গৃহবধূর স্বামী বলেন, ১১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে ব্যবসায়ীক কাজে গড়ইখালী বাজারে যাই। প্রতিবেশীরা ভোর ৫টার দিকে আমাকে কল দিয়ে ঘটনা জানালে আমি ফিরে আসি। তিনি আরো বলেন, একতলা ছাদের উপরের সিঁড়ি ঘর খোলা ছিল। পূর্বপরিকল্পিতভাবে একাধিক লোক আমার বাড়িতে প্রবেশ করেছিল। সেখানে আমার স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ডাকাতি করেছে। তার কানে থাকা স্বর্ণের দুল ছিঁড়ে নিয়ে গেছে। তার চোখে আঠা দেওয়া ছিল এবং কান ছেঁড়া ছিল। আমার স্ত্রী কথা বলতে পারছে না। আমি দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
এ ব্যাপারে রাড়–লী ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এসআই ইমরান হোসেন জানান, ভোর ৫টার পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরে দেখি স্থানীয় লোকজন গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে। লোকজন এবং পরিবারের বর্ণনা অনুযায়ী জানতে পারি, ওই দিন রাতে ভিকটিমের স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। এ সুযোগে কতিপয় দুবৃর্ত্ত ভিকটিমকে পাশবিক নির্যাতন করেছে বলে ধারণা করছি। ভিকটিম অনেক বেশি অসুস্থ থাকায় তার কাছ থেকে কোন কিছু জানা যায়নি। এ খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ডি—সার্কেল) সাইফুল ইসলাম ও ওসি ওবাইদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে ওসি ওবাইদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিমের পরিবার থেকে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। ইতোমধ্যে পুলিশের উর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনসহ এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে থানা পুলিশের এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. কনক হোসেন বলেন, সকালে ভুক্তভোগী নারী যখন আসেন তখন তার দুই চোখের পাতা আঠা দিয়ে লাগানো ছিল। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, তাকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা গাইনি ও চক্ষু বিভাগে তার চিকিৎসা করিয়েছি। বর্তমানে রোগীর জ্ঞান ফিরেছে। তবে এখন পর্যন্ত তিনি সুস্থ নন। তবে আশা করছি দ্রুত তিনি স্বাভাবিক হতে পারবেন।