সমাজের কথা ডেস্ক : স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রস্তাব প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু । তিনি বলেন, গাজা সংঘাত বন্ধ হওয়ার পর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রস্তাব তার বিরোধিতা করেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
গত বছরের ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েল অভিমুখে হাজার হাজার রকেট ছুড়ে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এতে ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৪০০ জন। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ২৩ হাজার ফিলিস্তিনি, আহত ৫০ হাজারেরও বেশি। হতাহতদের বেশিরভাগিই বেসামরিক।
এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, 'পুরোপুরি বিজয়' অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত গাজায় আক্রমণ অব্যাহত থাকবে। 'পুরোপুরি বিজয়' বলতে নেতানিয়াহু হামাসের ধ্বংস এবং বাদবাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির কথা বোঝাচ্ছেন। তিনি এটাও বলছেন, এই লক্ষ্য অর্জনে আরও কয়েক মাস লাগতে পারে।
জেরে হামলা বন্ধ এবং স্থায়ীভাবে যুদ্ধের ইতি টানার লক্ষ্যে অর্থবহ সংলাপে অংশ নিতে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছেন নেতানিয়াহু। এমনকি মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও নতুন করে দীর্ঘদিন আলোচনার বাইরে থাকা সেই দুই রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানেরই তাগিদ দিচ্ছে।
দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান মানে ভবিষ্যতের ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশেই প্রতিষ্ঠা পাবে। বর্তমান সংকট হয়তো বিবদমান পক্ষগুলোকে আবার কূটনীতির পথে ফিরতে বাধ্য করবে। সেটিই অন্তহীন সংঘাত বন্ধের একমাত্র পথ।
তবে নেতানিয়াহু এমন সমাধানে রাজি নন। গতকাল বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘জর্ডান নদীর পশ্চিমের ভূভাগে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ থাকা আবশ্যক।’ অথচ, এই ভূমি সম্ভাব্য ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সীমানার মধ্যে পড়ার কথা।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটা এক অপরিহার্য পরিস্থিতি এবং এটা ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্বের সাথে সাংঘর্ষিক। কিন্তু, কী আর করা? আমি আমার মার্কিন বন্ধুদের এই সত্যিটাই বলেছি এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করে এমন কোন বাস্তবতা আরোপ করার চেষ্টা বন্ধ করে দিয়েছি।’
নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের একটা বড় অংশ ব্যয় করেছেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ধারণার বিরোধিতায়। গত মাসেই সদর্পে বলেছেন, সেই রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ঠেকিয়ে দিতে পেরে তিনি গর্বিত।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক তৎপরতার প্রকাশ্য বিরোধিতা এবং চলমান সামরিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার প্রত্যয় আভাস দিচ্ছে যে পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে ইসরায়েলের দূরত্ব বাড়ছে।"