নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে ৫২শ মোমবাতি প্রজ্বালন করেছে চাঁদের হাট যশোর।
যশোর কেন্দ্রীয় শহিদমিনারে মোমবাতি প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি বলেছেন, শোষণহীন সমাজের স্বপ্ন, গণতন্ত্র, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা, অভিন্ন জাতিসত্ত্বা গঠন ও একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নের বীজ বপন করা হয়েছিল বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে।
জাতি হিসেবে আমাদের যে অহংকারের জায়গাগুলো আছে, তার মধ্যে ভাষা আন্দোলন, সমৃদ্ধ বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি অন্যতম। বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টিকে মনেপ্রাণে আচরণে ধারণ করে তাই সুষ্ঠু সাংস্কৃতিক চেতনাকে বেগবান করতে হবে। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
মহান ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে যশোর কেন্দ্রীয় শহিদমিনার প্রাঙ্গণে চাঁদের হাটের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
মহান শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সোমবার যশোরে বিশেষ কর্মসূচি পালন করা হয়। কেন্দ্রীয় শহিদমিনার এবং সরকারি এমএম কলেজ শহিদমিনার পাদদেশে সন্ধ্যায় ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা এবং মোমবাতি প্রজ্বালনের আয়োজন করা হয়।
কেন্দ্রীয় শহিদমিনার প্রাঙ্গণে চাঁদের হাটের আয়োজনে বিকেল পাঁচটা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। দেশাত্ববোধক ভাষার গান এবং নৃত্যে সাজানো হয় সমগ্র অনুষ্ঠান। এতে চাঁদের হাট, ভৈরব সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, সুরবিতান, উদীচী, সুরধুনী ও পুনশ্চের শিল্পীরা অংশ নেন।
সন্ধ্যায় সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে ৫২শ মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়। চাঁদের হাটের সভাপতি ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুলের সভাপতিত্বে আলোচনা পর্বে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, যশোর পৌরসভার মেয়র হায়দার গণী খান পলাশ, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সুকুমার দাস।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন একুশে উদযাপন পর্ষদের সদস্য সচিব ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু। ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন একুশে উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক তন্দ্রা ভট্টাচার্য্য।
এদিকে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এবং সরকারি এমএম কলেজের আয়োজনে সন্ধ্যা ছয়টায় অনুষ্ঠান হয়। কলেজের শহিদমিনারে আয়োজিত এ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার এবং জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু।
উদীচী, পুনশ্চ, সুরধুনী, সুরবিতান, ভবের হাট, বিবর্তন, নৃত্যবিতান, শেকড়, সুরনিকেতন, স্বরলিপি, স্পন্দন, শিল্পাঙ্গণ, মা নৃত্যালয়, উৎকর্ষ, সরগম, সপ্তসুর, শিল্পীসৃষ্টি ও তির্যকের শিল্পীরা গান, নৃত্য, আবৃত্তি ও নাটক পরিবেশন করেন।