তহীদ মনি : যশোর রেলগেটে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদটির উদ্বোধন হবে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মসজিদটি উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছে নির্মাণ তদারকি প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত অধিদপ্তর।
প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ তলা বিশিষ্ট এই মসজিদের নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে। মসজিদটির সাথে ইসলামিক সাংস্কৃতিককেন্দ্র স্থাপিত হবে।
ইসলামী ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, ২০১৮ সালে দেশের ৫৬০ টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিককেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সরকার। এর আওতায় যশোরে জেলা পর্যায়ে একটিসহ ৮ উপজেলায় ৮টি মোট ৯টি মসজিদ স্থাপন করার সিদ্ধান্ত হয়। যশোর শহরের রেলগেট এলাকায়। প্রায় ৪৩ শতক জমির উপর নির্মিত মডেল মসজিদের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ১৭০ ফুট ও প্রস্থ ১১০ ফুট। তবে জেলা পর্যায়ে এ মসজিদ হবে ৪ তলা বিশিষ্ট এবং উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি মসজিদ হবে ৩ তলা বিশিষ্ট। প্রতিটি মসজিদ কমপ্লেক্সে ইমাম প্রশিক্ষণকেন্দ্র, লাশ দাফনের প্রস্তুতির কক্ষ, মহিলাদের নামাজের কক্ষ, ইসলামিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার কক্ষ, পাঠাগার, হলরুম ও অফিস কক্ষ থাকবে। মসজিদে একত্রে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
সূত্রমতে, ২০১৯ সালের নভেম্বরে রেলগেট এলাকায় সরকারি অর্থায়নে জেলা সদরের মডেল মসজিদ নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ হয় গণপূর্ত অধিদপ্তর। নির্মাণ শেষে মসজিদটি ইসলামী ফাউন্ডেশনে হস্তান্তর করবে গণপূর্ত। ফাউন্ডেশনের জেলা কার্যালয়ও মসজিদের সাথে থাকবে। ইসলামী ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ফাউন্ডেশন হলো মসজিদের প্রত্যাশিত সংস্থা। গণপূর্ত অধিদপ্তরের কাছে জমি বুঝে দেওয়ার পর গণপূর্ত বিভাগ সেখানে মসজিদ নির্মাণ করছে। এ উপলক্ষে আড়াই বছর আগেই টেন্ডার চূড়ান্ত করা হয়েছিল। মসজিদের জন্য নির্ধারিত ৪৩ শতাংশ জমি পাওয়ার পর তারা নির্মাণকাজ শুরু করে।
এ কাজের চুক্তি মূল্য ১৪ কোটি ৮৭ লাখ ৭২ হাজার টাকা। নির্মাণ শুরুর ১৮ মাস অর্থাৎ দেড় বছরের মধ্যে এই মসজিদ তৈরি হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে মসজিদের ৯২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সে হিসেবে জানুয়ারি ২০২৩ এর মধ্যে যশোর জেলার মডেল মসজিদ নির্মাণ সম্পন্ন হবে এবং ঐ মাসেই প্রধানমন্ত্রী সেটি উদ্বোধন করবেন। তবে যেসব কাজ বাকি আছে তা সম্পন্ন করতে হাই পলিমার স্ট্রেন্থ, অর্নামেন্টাল গ্লাসসহ কিছু মেটেরিয়াল প্রয়োজন। কিন্তু তা পাওয়া যাচ্ছে না। পেতে বিলম্ব হওয়ার কারণে কাজ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সূত্র আরও জানায়, বেশকিছু দিন সকল প্রকার নির্মাণ সামগ্রীর দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক দ্রব্য ঠিকমতো পাওয়াও যাচ্ছে না। তারপরও চুক্তি মূল্য না বাড়িয়েই কাজটি যথা সময়ে শেষ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তারা বিশ্বাস করে জানুয়ারি মাসেই উদ্বোধন সম্ভব হবে। তবে উপজেলার মসজিদের অনেকগুলোর জায়গা এখনো নির্ধারিত হয়নি। সেগুলো কবে শেষ হবে তা সংশিস্নষ্টরা জানাতে পারেনি। শুধু যশোর সদর ও মণিরামপুর উপজেলা পর্যায়ের মডেল মসজিদের কাজ চলমান রয়েছে। অন্যগুলোর নতুন প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম জানান, দ্রব্যমূল্য নিয়ে কিছু সমস্যা থাকলেও কাজ সম্পন্নের ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হবে না। আগামী জানুয়ারিতেই সঠিক সময়ে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
ইসলামী ফাউন্ডেশনের যশোর অফিসের উপ-পরিচালক, বিল্লাল বিন কাশেম জানান, গণপূর্ত বিভাগ মসজিদ নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে। উপজেলা মডেল মসজিদ তৈরিতে এখনো সমস্যা রয়েছে। তবে জেলা মডেল মসজিদটি নতুন বছরেই আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হবে।