৯ই জুন ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
যশোরে এত গরম কেন
যশোরে এত গরম কেন ?

সাইফুল ইসলাম : সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ঈশ্বরদীতে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে যশোরে তাপপ্রবাহের পারদ নামেনি। সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

যশোরের আবহাওয়া নিয়ে গবেষণা করেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ছোলজার রহমান। তার দেয়া তথ্য মতে ২০০৭ সালের মে মাসে যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস , ২০০৮ সালে এপ্রিলে মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৯ সালে মে মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১০ সালে এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১১ সালে জুন মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১২ সালে জুন মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৫ সালের জুন মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৭ সালের মে মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৯ সালে জুনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০২২ সালে এপ্রিলে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০০৯ বা ২০১০ সালে বাংলাদেশের তাপমাত্রা ৪৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছিল। কিন্তু বর্তমানের মত এতো অস্বাভাবিক অবস্থা হয়নি জানান এ গবেষক।

বর্তমানে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালনকারী অধ্যাপক ছোলজার রহমান বলেন, চৈত্রের শেষে এবং বৈশাখের শুরুতে দেশে গরম পড়ে, তাই বলে এতো ব্যাপক আকার ধারণ করে না। অন্যান্য বছর ও অতীতকালের দিকে তাকালে দেখা যাবে নববর্ষের প্রথম দিনটি কখনো ৩৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় উপরে ওঠেনি।

এ বছর যা ৩৯ এবং ৪০ ডিগ্রীতে উন্নত হয়েছে। মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, খুলনা যশোরের বাসিন্দাদের কাছে ৩৯ এবং ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা অনেকটা অসনীয় ব্যাপার হয়ে গেছে। কেননা এ এলাকাগুলোতে দুটি ঘটনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এক. মেহেরপুর থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত বাংলাদেশের পশ্চিম সীমান্ত অবস্থানকারী এই এলাকাটি মধ্য ভারতে বিরাজমান। এই এলাকাটি কমবেশি প্রবাহিত হয়ে আদ্রতাহীন বা জলীয়বাষ্পহীন বায়ুপ্রবাহের এলাকায় পরিণত হয়েছে। আদ্রতা বিহীন বায়ুপ্রবাহ এ অঞ্চলের বায়ুকে উষ্ণ করে তুলেছে। অতীতে এ রূপ অবস্থা ছিল ঈশ্বরদী থেকে জয়পুরহাট পর্যন্ত। যা বর্তমানে দক্ষিনে সরে এই স্থানে এসেছে। ২য়. ভূপৃষ্ঠ মৃত্তিকা সূর্য থেকে আগত সৌর তাপ শোষণ করে তাপে তীব্রতা কমিয়ে দেয়।

বনভূমি, গাছপালা, বায়ুপ্রবাহ ও জলদার সমূহ সূর্য থেকে আগের তাপ শোষণ করে তাপের তীব্রতা কমিয়ে দেয়। বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে তথা গোটা বাংলাদেশে বনভূমি, গাছপালা জলাধার ইত্যাদিকে আর টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে না। হলে মৃত্তিকা জৈব পদার্থ ও জলীয় আর্দ্রতা হারাচ্ছে যা সৌরতাপ শোষণ করতে পারছে না। মৃতিকা সৌরতাপকে ধারণ না করে নিচের বায়ু মন্ডলে ফিরিয়ে দিচ্ছে এ কারণে গরমে তীব্র গরম এবং শীতকালে তীব্র শীতের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রতিকার হিসেবে জলাধার দখল ভরাট চলবে না, জমিতে জৈবসার ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে, ভূগর্ভস্থ পানির উত্তোলন কমিয়ে এবং সকল পানির ট্যাংকের উপরে রেইন ওয়াটার হারবেস্টিং সিস্টেম স্থাপন করা প্রয়োজন। পানির ট্যাংক লাইন উপরে না দিয়ে নিচে লাগানো প্রয়োজন।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
Fri Sat Sun Mon Tue Wed Thu
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram