২৮শে মে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
মহম্মদপুরে ১৫০ বিঘা জমিতে যান্ত্রিক ধান চাষ শুরু
মহম্মদপুরে ১৫০ বিঘা জমিতে যান্ত্রিক ধান চাষ শুরু
90 বার পঠিত

মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি : মাগুরার মহম্মদপুরে উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের পেয়াদাপাড়ার হরিণধরার মাঠে যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিক চাষাবাদের মাধ্যমে ১৫০ বিঘা জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে প্রাথমিক ভাবে বোরো ধানের চাষাবাদ শুরম্ন হয়েছে।


গত শনিবার বিকালে উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ আয়োজনে রবি প্রণোদনা ২০২২-২৩ অর্থবছরে বোরো হাইব্রিড (এসএলএইট এইচ) ধানের সমলয় চাষের ট্রেতে উৎপাদিত চারা রাইসট্রান্স প্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।


উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাসুদেব কুমার মালোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল মান্নান, সভাপতি, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত উপপরিচালাক কৃষিবিদ বিষ্ণু পদ সাহা, ইউপি চেয়ারম্যান শিকদার মিজানুর রহমান প্রমুখ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই চাষাবাদে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। এতে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে মাত্র ১ হাজার ২০০ টাকা। শ্রমিক দিয়ে ধান রোপণ করতে গেলে অন্তত ৬ হাজার টাকা খরচ হতো।


এ ছাড়া উইডার মেশিন দিয়ে নিড়ানি দেওয়া হবে। এতে মাত্র দুইজন শ্রমিক প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে অšত্মত ১০ জন শ্রমিকের মজুরি সাশ্রয় হবে। এই ধান পাকার পর কম্বাইন্ড হারবেস্টার দিয়ে কেটে মাড়াই করে দেয়া হবে। এই মেশিন দিয়ে ১ বিঘা জমির ধান কাটতে মাত্র ১৫০০ টাকা ব্যয় হবে। এতে সাশ্রয় হবে অšত্মত সাড়ে ৭ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে এই পদ্ধতির চাষাবাদে কৃষকের বিঘা প্রতি অšত্মত ১২ হাজার টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।


এই পদ্ধতির চাষাবাদে বিঘা প্রতি হাইব্রিডে ৩০ মণের স্থলে ৩৫ মণ ধান উৎপাদিত হবে। উফশী জাতে ২৫ মণের স্থলে ৩০ মণ ধান উৎপাদিত হবে। এই পদ্ধতির চাষাবাদে জমিতে কোনো আইল থাকে না। এ ছাড়া ২০ থেকে ২২ দিন বয়সের ধানের চারা রোপণ করতে হয়। তাই ধানের উৎপাদন বেড়ে যায়।


পেয়াদাপাড়া গ্রামের কৃষক মো. আবু হাসান মোল্যা বলেন, ‘নতুন পদ্ধতির চাষাবাদে সবই যন্ত্রের ব্যবহার। এখানে শ্রমিক তেমন লাগে না। ধান কাটার সময় শ্রমিক সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। তখন শ্রমিককে ১ হাজার টাকা মজুরি দিতে হয়। ধান নিয়ে আমাদের দুশ্চিšত্মার শেষ থাকে না। সময়মতো শ্রমিক না পাওয়ায় ঝড়-বৃষ্টিতে অনেক সময় ফসল ক্ষতিগ্র¯ত্ম হয়। এই চাষাবাদে অধিক ফলন পেয়ে দ্রম্নত ধান ঘরে তুলতে পারবো। এতে আমাদের অধিক লাভ হবে।’


মহম্মদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান বলেন, ‘সমলয়ে চাষাবাদে পেয়াদাপাড়ার গ্রামের ১০৪ জন কৃষককে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তাদের জমিতে এই পদ্ধতির চাষাবাদ হচ্ছে। চাষাবাদের শুরম্নতে আমরা ট্রেতে বীজতলা করেছি। প্রতি বিঘায় প্রচলিত চাষাবাদে হাইব্রিড ধানবীজ ২ কেজি ও উফশী ধানবীজ ৫ কেজি দিয়ে বীজতলা তৈরি করতে হয়। সেখানে সমলয়ে চাষাবাদে বিঘা প্রতি বীজ খরচ অর্ধেক হয়েছে। মহম্মদপুর উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৬ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হচ্ছে। এরমধ্যে আইল রয়েছে প্রায় ৩০০ হেক্টর। জমির আইল অনাবাদী থাকে। সব জমিতে সমলয়ে চাষাবাদ হলে ওই জমি চাষাবাদের আওতায় আসতো। এতে আরও প্রায় ১৫০০ মেট্রিক টন ধান বেশি উৎপাদন হতো।’ এই চাষাবাদ ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশ খাদ্য উৎপাদনে আরও সমৃদ্ধ হবে বলে ওই কৃষি কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।


মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, ‘সরকার কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করতে চাইছে। এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে শ্রমিক কম লাগে। এ ছাড়া ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। মহম্মদপুর উপজেলায় সমলয়ে চাষাবাদ কার্যক্রমের আওতায় ১৫০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ শুরম্ন হয়েছে। এই পদ্ধতির চাষাবাদে একই জাতের ফসল আবাদ করতে হয়। ম্যানেজমেন্ট ও সেচ-নিকাশ খুব সহজ। ধানের অধিক ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
Fri Sat Sun Mon Tue Wed Thu
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram