নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রীর আগমনের বার্তায় শুধু যশোর নয়, গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করেছে। নেতৃবৃন্দের নিরলস প্রচেষ্টায় জেগে উঠেছে দেশের বৃহত্তম এ রাজনৈতিক দলের কর্মী সমর্থকরা। একইসাথে অনুপ্রাণিত হয়েছে সাধারণ মানুষ। সবার নজর এখন বৃহস্পতিবার যশোর স্টেডিয়াম। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে যশোর স্টেডিয়ামসহ পুরো শহরকে নতুনরূপে সাজানো হয়েছে। বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
মঞ্চ সাজ-সজ্জা উপ-পর্ষদ সদস্য এসএম মাহমুদ হাসান বিপু জানান, ৩০০'র অধিক মাইক লাগানোর ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার আইনশৃঙ্খলা রড়্গাকারি বাহিনীর ডগ স্কোয়াড সভাস্থলে তলস্নাশী করেছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ঘুরে দেখেছেন সভাস্থল, খোঁজ রাখেন নিয়মিত। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জনসভাস্থল পরিদর্শ করেন বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, কেন্দ্রীয় যুব লীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, যশোর-২ আসনে সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল মজিদ, যশোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মঞ্চ সাজ-সজ্জা উপ-পর্ষদ সদস্য এসএম মাহমুদ হাসান বিপু প্রমুখ।
সোমবার বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন সভাস্থল ঘুরে দেখে বলেন, ২৪ নভেম্বর যশোর স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসভা। জনসভা জনসমুদ্রে রূপ নেবে।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, আমরা মনে করছি জনসভায় পাঁচ লাখের বেশি জনসমাগম হবে। আমাদের প্রত্যাশা ওই দিন শহরে পা রাখার জায়গা হবে না। যশোর ছাড়াও খুলনা বিভাগের সবকটি জেলা ও গোপালগঞ্জ থেকে নেতাকর্মীরা আসবেন।
সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরও বলেন, আমাদের এই জনসভা সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সকল কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে আটটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কমিটি তাদের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করছে। সবার মধ্যে একটা উচ্ছ্বাস কাজ করছেন নেত্রী আসবেন বলে।
খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনার জন্য মানুষের যেমন ঢল নেমেছিল, ঠিক যশোরে তেমনি মানুষের ঢল নামবে। যশোরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে খুলনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। খুলনা থেকে অর্ধলাখ নেতাকর্মী বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস নিয়ে যশোরের জনসভায় যোগ দেবেন বলেও জানান তিনি।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল মজিদ বলেন, ‘নৌকার আদলে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। নৌকার পরিমাপ ১২০ ফুট ৪০ ফুট। তবে স্টেজ করা হয়েছে ৮০ ফুট বাই ৪০ ফুট। মঞ্চে ৭৬ ফুট বাই ১০ ফুট ব্যানার দেওয়া হয়েছে। পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মঞ্চ সাজ-সজ্জা উপ-পর্ষদ সদস্য এসএম মাহমুদ হাসান বিপু বলেন, মঞ্চের কাজ শেষ । সভাস্থলসহ শহরের ৩০০ অধিক মাইক লাগানো হয়েছে। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রড়্গাকারি বাহিনীর ডগ স্কোয়াড তলস্নাশি করেছে।
সড়কগুলো প্রতিনিয়ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। সেইসাথে সড়ক সংস্কারের পাশাপাশি ভবনগুলো রঙিন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর যাওয়া-আসার রাস্তা রেখে শহরের অন্যান্য সড়কে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। জনসভা ঘিরে শহরজুড়ে নিজেদের প্রচারণার ব্যানার কমিটি ছাড়াও পোস্টার করেছেন স্থানীয় নেতারা। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার-ফেস্টুন ও পোস্টার টানিয়েছেন দলীয় নেতারা। যশোর বিমানবন্দর থেকে যে সড়কপথে প্রধানমন্ত্রী জনসভাস্থলে পৌঁছাবেন, সে পথে সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ভবনের দেয়ালে নতুন রঙ করা হয়েছে।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, জনসভা উপলক্ষে এরই মধ্যে পোস্টারিং, মাইকিং ও প্রচার-প্রচারণা চলছে। সভা-সমাবেশের বাইরে সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জনসভা সফল করতে প্রতিনিয়ত প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জনসভায় সেবা দিতে রয়েছে ৪০০ সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক কমিটি। জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুখেন মজুমদারকে আহ্বায়ক করে শৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাসেবক এই উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক কমিটির সদস্যরা সমাবেশস্থল, প্রবেশমুখ ও জনসভায় আগতদের সহযোগিতা করতে শহরের প্রবেশমুখে থাকবেন বলেও জানা গেছে।
১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর যশোরের এই স্টেডিয়ামে ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিনের ঐতিহাসিক জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। ৫০ বছর পর একই মাঠে ২৪ নভেম্বর জনসভায় ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অতীতের যেকোনো জনসভার চেয়ে বড় জমায়েত করতে চায় আওয়ামী লীগ।