মোতাহার হোসেন, মণিরামপুর : যশোরের মণিরামপুরে কাভার্ডভ্যান চাপায় নিহত সহায় সম্বলহীন দিনমজুর তৌহিদুল ইসলামের তিন শিশু সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন তৌহিদুলের স্ত্রী আমেনা বেগম। তার চোখে এখন অসীম অন্ধকার।সন্তানদের নিয়ে কীভাবে চলবে এই ভাবনায় মুষড়ে পড়েছেন তিনি।
দিন আনা দিন খাওয়া নিহত তৌহিদুল ইসলামের সহায় সম্বল বলতে কেবল ভাঙ্গাচোরা ঘর টুকুই আছে। সেই ঘরও পরের জমিতে। বেগারীতলা বাজারে বাঁশের হাটে শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাতেন নিহত তৌহিদুল ইসলাম। শনিবার নিহত তৌহিদুল ইসলামের বাড়িতে গেলে দেখা যায় নির্বাক বসে আছেন আমেনা বেগম। এক পর্যায়ে জানান, কী করবেন, কোথায় যাবেন, কীভাবে ওই শিশু সšত্মানদের ভরণ-পোষণ চালাবেন এ নিয়েই দুশ্চিšত্মা তার। এদিকে কাভার্ডভ্যান চাপায় নিহতের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
শুক্রবার যশোর-চুকনগর মহাসড়কের বেগারীতলা বাজারে কাভার্ডভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বেশ কয়েকটি দোকান ভেঙ্গে খাবার হোটেলে ঢুকে পড়ে। এসময় হোটেলে নাশতার পর পাশের চায়ের দোকানে খাটের উপর বসেছিলেন তৌহিদুলসহ টুনিয়াঘরার নিহত শামছুর রহমান ও জিয়াউর রহমান। নিয়ন্ত্রণহীন কাভার্ডভ্যান মহাসড়ক ছেড়ে পাশের দোকানগুলোতে উঠে পড়ে। এসময় চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তারা প্রাণ হারান। একই সময় ৬ বছরের ছেলে তাওহীদ হাবিব তাওসিকে নিয়ে বাবা হাবিবুর রহমান পরোটা খেতে হোটেলে যাচ্ছিলেন। ওই কাভার্ডভ্যান চাপা দিলে তারাও প্রাণ হারান।
সরেজমিন নিহত তৌহিদুলের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, তখনও শোকের মাতম চলছিল। এসময় প্রতিবেশী অনেকেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনড়্গম স্বামী হারানো আমেনা বেগমকে সাšত্ম্বনা দিচ্ছিলেন। নিহত তৌহিদুল ইসলামের ৪ সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে হাবিবার তিন বছর আগে বিয়ে হয়েছে। মেজ মেয়ে সোহানা খাতুন ২য় শ্রেণিতে, সেজ সন্তান শাওন হোসেন ১ম শ্রেণিতে আর ছোট সšত্মান হাফসার বয়স মাত্র ৫ মাস।
প্রতিবেশী শামছুন্নাহার, সিরাজুল ইসলামসহ অনেকেই বলেন, নিহত তৌহিদুলের সহায় সম্বল কিছুই নেই। জীর্ণ যে ঘরে বাস করতেন সেটিও পরের জমিতে।
থানার ওসি শেখ মনিরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় নিহত হাবিবুর রহমানের ছোট ভাই ইব্রাহিম খলিল বাদি হয়ে কাভার্ডভ্যান চালক ও হেলপারের নামে থানায় মামলা দায়ের করলেও তাদের নাম প্রকাশ করতে চাননি তিনি।