নিজস্ব প্রতিবেদক :
ইজিবাইকের মধ্যে হত্যার পর হাসপাতালে ফেলে যাওয়া মরদেহটি সাতক্ষীরার মুস্তাফিজুর রহমানের। তিনি এসআর ফিড নামে একটি কোম্পানির খুলনা বিভাগীয় কর্মকর্তা ছিলেন। পরিবার নিয়ে থাকতেন সাতক্ষীরা শহরে। ব্যক্তিগত দেনাপাওয়া সংক্রান্ত একটি বিষয়ে রোববার যশোরে এসেছিলেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মুস্তাফিজের বড় ভাই আব্দুল মুত্তালিব গতকাল যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে এসে লাশ শানক্ত করেন। তিনি বাদী হয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় এজাহার দিয়েছেন। এজহারে আসামি অজ্ঞাতনামা দেখানো হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস জানিয়েছেন, রোববার সকাল ৭টার দিকে খুলনার অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন তার স্বামী। খুলনা থেকে অফিসিয়াল কাজে ঝিনাইদহে যাওয়ার কথা ছিল। ঝিনাইদহ থেকে ফেরার পথে তাকে হত্যা করা হতে পারে।
তিনি আরো জানিয়েছেন, রবিউল ইসলাম নামে তার এক সহকর্মী সাথে ছিলেন। হঠাৎ করে রবিউলের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে জানতে পারেন যশোরের চাঁচড়া এলাকায় স্বামীকে খুন হয়েছে। লাশ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। পরে তিনি হাসপাতালে এসে তার স্বামীর লাশ দেখতে পান।
মুস্তাফিজ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের সাহাপাড়ার আব্দুল্লাহ আল মামুনের ছেলে।
গত রোববার চাঁচড়া থেকে অপহরণ করে ইজিবাইকে তুলে মুস্তাফিজকে হত্যা করে দুর্র্বৃত্তরা। পরে অজ্ঞাত হিসেবে লাশ হাসপাতালে ফেলে রেখে যায়।
মুস্তাফিজুরের ভাই আব্দুল মুত্তালিব জানিয়েছেন, তার ভাই মুস্তাফিজুর এর আগে ঢাকার একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সেখান থেকে চাকরি ছেড়ে বর্তমানে এসআর ফিড নামে একটি কোম্পানিতে খুলনার ডিভিশনাল কর্মকর্তা হিসেবে আছেন। স্ত্রীসহ সাতক্ষীরায় বাসা ভাড়া করে থাকেন। কিন্তু ঢাকায় চাকরি করা কালে মুস্তাফিজুর রহমানের পরিচিত এক যুবকের সাথে কিছু লেনদেন ছিল। সেই লেনদেন বিষয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। গত রোববার ৪ সেপ্টেম্বর কাউকে কিছু না বলে সাতক্ষীরা থেকে যশোরে আসে।
আব্দুল মুত্তালিবের ধারণা তার সাথে বিরোধ থাকা লোকজনে কোন কৌশলে তাকে যশোরে এনেছে। যশোরের চাঁচড়া চেকপোস্ট এলাকায় বাস থেকে নেমে হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করেছে। এরপর তাকে জোর করে একটি ইজিবাইকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় মুস্তাফিজের তাদের সাথে যেতে অনাগ্রহ থাকায় তারা এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। একপর্যায় ইজিবাইকের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। কিন্তু রোববার বিকেল ৪টার দিকে মুস্তাফিজের সাথে তার মোবাইলে কথা হয়েছে। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সোমবার বিভিন্ন পত্রিকায় যশোর সদর হাসপাতালে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের লাশ পড়ে আছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তার কোন সন্ধান না পেয়ে যশোর হাসপাতালে এসে লাশ সনাক্ত করা হয়।
তিনি আরো জানিয়েছেন, মুস্তাফিজের সাথে তার কয়েক বন্ধু ছিল। পাওনাদারের সাথে মুস্তাফিজের বন্ধু যোগসাজস করে যশোরে নিয়ে আসে।
কোতোয়ালী থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, আর্থিক লেনদেনের কারণে মুস্তাফিজর রহমানকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে অন্তর মন্ডল নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।