সোমেল রানা, মেহেরপুর : প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১বিঘার মেহেরপুর পৌর গড় পুকুরকে বিনোদন কেন্দ্রে রূপাšত্মর করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিনোদন কেন্দ্র’র কাজ শুরু হয়েছে।
নির্মাণকাজ শেষ হলে ঐতিহাসিক গড় পুকুর হবে জেলার অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র। এই গড়পুকুর মেহেরপুর পৌরসভা তথা জেলার ঐতিহ্য। এর আগে সাবেক পৌর মেয়র মোতাচ্ছিম বিলস্নাহ মতু ২০০৮ সালে গড় পুকুরে কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যাবলকারসহ নাগরদোলা করে বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন।
সে সময় গণমানুষের আপত্তির মুখে গড়পুকুর পাড়ে মাছের আড়ৎ নির্মাণে পরিবেশ দূষিত হয়। ক্যাবলকার পুকুরের মাঝখানে বন্ধ হয়ে শিশুদের আটকে যাওয়া এবং নাগরদোলা মানসম্মত না হওয়ায় বিমুখ হয় মানুষ। বন্ধ হয়ে যায় সেসব।
বর্তমান মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন গড় পুকুরকে ঘিরে পৌরবাসীর জন্য বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তুলবেন। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি’র অর্থায়নে।
প্রাক্কলিত মূল্য ১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা ধরা হলেও ঠিকেদারি প্রতিষ্ঠান বগুড়ার মেসার্স মাসুমা বেগম এন্টার প্রাইজ চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ১১ কোটি ৫৬ লাখ টাকায়। আগামী মাসের মধ্যে কাজ দৃশ্যমান হলেও জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে ঠিকেদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. মিলন আশা প্রকাশ করছেন।
মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন জানান, বিভিন্ন কারণে গড়পুকুরকে ঘিরে বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ এতদিন আটকে ছিলো। বিভিন্ন দেশের পুকুর ও নদীভিত্তিক বিনোদন কেন্দ্র দেখে নক্সা করা হয়েছে। এটি নির্মাণ হলে খুলনা বিভাগে হবে ব্যতিক্রম বিনোদন কেন্দ্র।
শিশুদের সামাজিকীকরণে বিনোদন বড়ই প্রভাব ফেলে। আমাদের শিশুদের ভাবনার সীমাবদ্ধতাকে দূর করতেই গড়পুকুরকে কেন্দ্র করে বিনোদনকেন্দ্র গড়ার নির্বাচনী প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলাম।
তিনি আরও জানান, গড় পুকুরের সৌন্দর্য বর্ধণে ঢাল সুরড়্গা বেস্টনি, থাকবে গণমানুষের জন্য দুটি পাবলিক টয়লেট, নিরাপত্তা রড়্গীর কামরা, শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা, পুরো গড় এলাকা হবে সবুজ বেস্টনি, পুকুরের
চতুর্দিকে ওয়াকওয়ে, পুকুরের দড়্গণিদিকে থাকবে নাট্যমঞ্চ, থাকবে চারদিক জুড়ে কংক্রিট বেঞ্চ, দুটি ফুড কর্নার, নারী পরুষের জন্য আলাদা আলাদা চেঞ্জিং রুম, দুইটা কফি হাউজ, পুরো পুকুর জুড়ে থাকবে ৭টি সিঁড়ি, গাড়ি
পার্কিং এর ব্যবস্থা, শিশুদের বিনোদনের জন্য থাকবে বিভিন্ন ধরণের রাইড, টিকিট কাউন্টার ইত্যাদি। এখান থেকে পৌরসভা যে আয় করবে তা দিয়ে পৌর স্টাফদের বেতন হবে। ফলে পৌর কর্মচারীদের আর বেতন বন্ধ থাকার সুযোগ থাকবেনা।
মেহেরপুরের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মাহবুবুল হক মন্টু জানান, গড় পুকুরকে ঘিরে বিনোদন কেন্দ্র নির্মিত হলে গড়পুকুর, মুজিবনগর স্মৃতি প্রকল্প, আমঝুপি কুঠিবাড়ি, নিগমানন্দ আশ্রম ও ভাটপাড়া কুঠিবাড়ি নিয়ে আন্তজেলা পর্যটন জোন গড়ে তুলতে হবে।
জেলা শহরের আরেক সাংস্কৃতিকজন শামীম জাহাঙ্গীর সেন্টু জানান, বিনোদন আমাদের জীবনের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। জেলা শহরে নেই কোন শিশুপার্ক। এই বিনোদন কেন্দ্র নির্মিত হলে আমাদের শিশুরা পাবে প্ররশান্তির ছায়া।