১২ই মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
কাবিখা—কাবিটা কর্মসূচিতে নয়—ছয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার কাবিখা—কাবিটা কর্মসূচির লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকল্পের কাজ না করেই বা সামান্য কাজ করেই পুরোটাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প সভাপতিদের বিরুদ্ধে।

অনেকগুলো প্রকল্পে কোনো কাজ হয়নি বলে স্থানীয়রা দাবি করলেও প্রকল্প সভাপতিরা বলছেন উল্টোকথা। আর উপজেলা প্রশাসন অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে। আর এ নিয়ে উপজেলায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র জানায়, ২০২২—২০২৩ অর্থ—বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা—কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় নিবার্চনী এলাকাভিত্তিক প্রথম পর্যায়ে নগদ অর্থ টাকা ও খাদ্যশস্য চাল গম বরাদ্দ দেয় দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। এসব বরাদ্দ বাঘারপাড়া উপজেলার বিভিন্ন রাস্তা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রকল্প গ্রহণ করেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও কাজ না করে; আবার কোথাও সামান্য কিছু কাজ করে বিল তুলে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব অনিয়মে জড়িত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতার্ ও প্রকল্পের সভাপতি। গত ৯ অক্টোবর উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে এসব বিল ছাড় করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, জামদিয়া ইউনিয়নের দোগাছি গ্রামে ১১খান পঞ্চতীর্থ মহাশ্মশানের মাঠে মাটি ভরাট ও চিতা সংস্কার প্রকল্পে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, শ্মশানের মাঠে বড় ঘাস জন্ম নিয়েছে। চিতা সংস্কারের কোনো নমুনাই পাওয়া যায়নি। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ মহাশ্মশান বানানোর পর কোনোদিনই মাটিভরাট বা চিতা সংস্কারের কাজ করতে দেখিনি।

হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে গত ৯ অক্টোবর ১২ নং ভাউচারে দুই কিস্তিতে এ টাকা তুলে নিয়েছেন প্রকল্পের সভাপতি নিখিল কুমার আঢ্য। তবে প্রকল্পের সভাপতি নিখিল কুমার আঢ্য দাবি করেছেন, মহাশ্মশানে মাঠে মাটি ভরাট করা হয়েছে, চিতাও সংস্কার করা হয়েছে।

একই ইউনিয়নের বাকড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ মেরামত ও মাঠে মাটি ভরাট প্রকল্পে ৮লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্কুলের কোথাও কোনো কাজ হয়নি।

বর্তমান এমপি রণজিৎ রায়ের ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে স্কুলের পুকুর ভরাট করে একটি ভবন করা হচ্ছে। যা এমপির পিএস’র ফেইসবুক থেকে দেখেছি। ওই সূত্র আরও বলেন, এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ মেরামত বা মাঠে মাটি দিতেও আমরা দেখিনি।

হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে গত ৯ অক্টোবর ১১ নং ভাউচারে দুই কিস্তিতে এ টাকা তুলে নিয়েছেন প্রকল্পের সভাপতি। প্রকল্পের সভাপতি ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পরিমল গোলদার বলেন, সাংবাদিকদের চোখ নেই। সব টাকার কাজ করা হয়েছে।

নারিকেলবাড়ীয়া সেবা সংঘ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাট ও ক্লাস রুম সংস্কার প্রকল্পে সাত লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের মাঠে কোন মাটি ভরাট করা হয়নি। শ্রেণিকক্ষে সামান্য কিছু কাজ করা হয়েছে। হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে গত ৯ অক্টোবর ০৬ নং ভাউচারে দুই কিস্তিতে এ টাকা তুলে নিয়েছেন প্রকল্পের সভাপতি।

প্রকল্পের সভাপতি এ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক জানান, প্রকল্পের টাকা দিয়ে দ্বিতীয়তলার কাজ করা হয়েছে। মাঠে সামান্য কিছু মাটি দেওয়া হয়েছে।

খাজুরা কেন্দ্রীয় মহাশ্মশানে রাস্তা মাটির মেরামত প্রকল্পে আট লাখ টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, চিত্রা নদী খননের মাটি দিয়ে রাস্তা মেরামত করা হয়েছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, নদী খননের মাটি এখানে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে ০১ নং ভাউচারে দুই কিস্তিতে এ টাকা তুলে নিয়েছেন প্রকল্পের সভাপতি। প্রকল্পের সভাপতি লিন্টু রায়ের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতার্ ইসতিয়াক আহম্মেদ সাংবাদিকদের জানান, প্রকল্পের টাকা আগেই দেওয়া হয়। কাজ না করলে সভাপতিকে চিঠি দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করা হবে। উপজেলা নিবার্হী অফিসার হোসনে আরা তান্নি জানান, অভিযোগের বিষয় খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram