সমাজের কথা ডেস্ক॥ তিন দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গ শাসন করে ২০১১ সালে ক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়ার পর এবার ভারতের জাতীয় নির্বাচনে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নানা হিসাব-নিকাশ মেলাতে শুরু করেছেন ভারতের বামপন্থীরা।
এরই অংশ হিসেবে থার্ড ফ্রন্ট গঠনের জন্য পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীদের প্রধান বিরোধী শক্তি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেও জোট বাধার পরামর্শ আসছে দলটির গুরুত্বপূর্ণ এক নেতার কাছ থেকে।
কংগ্রেস ও বিজেপিকে বাইরে রেখে এ ধরনের তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের উদ্যোগ ১৯৯০ সালের পরেও হয়েছিল, যারই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে ভারতের রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি।
সম্প্রতি বামপন্থী জোট ও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআই) প্রখ্যাত নেতা এবি বর্ধন বলেছেন, তথাকথিত মোদি ঢেউ ও বিজেপির ক্ষমতায় যাওয়া ঠেকাতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাত মেলাতেও তাদের আপত্তি নেই।
“মমতা ধর্মনিরপেক্ষ এবং বাংলাদেশিদের নিয়ে মোদির মন্তব্যের কড়া বিরোধিতাকারী। আমি মনেকরি বিজেপির ক্ষমতায় যাওয়া ঠেকাতে থার্ড ফ্রন্ট গঠনে সহায়তা করবে।”
অবশ্য এর আগে মমতার ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের ভাবনার বিরোধিতা করে সিপিআই।
এদিকে গণমাধ্যমে এবি বর্ধনের বক্তব্য প্রচারের পর বাম জোটের ভেতর থেকেই নানা ধরনের বক্তব্য এসেছে।
সিপিআই দপ্তর থেকে বর্ধনের বক্তব্যকে ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, “সিপিআইয়ের আকাঙ্খা সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবগত আছেন এবং তিনি প্রকৃতপক্ষে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের মাধ্যমে ভোটারদের বিভক্ত করে বিজেপিকেই সহায়তা করছেন।”
মমতার সঙ্গে মোদির বাকযুদ্ধকে ‘পরিকল্পিত গেইম’ বলেও অভিহিত করেছে সিপিআই।
এদিকে ভারতের মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিএম) সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত সিপিআই নেতা এবি বর্ধনের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন।
“পশ্চিবঙ্গে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির উত্থানের জন্য কাজ করছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির সঙ্গে যোগ দেয়ার বিষয়ে মমতার সুযোগসন্ধানী রেকর্ড রয়েছে। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর মমতা যে বিজেপির সঙ্গে আবারো যোগ দেবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।”
সিপিআইয়ের আরেক নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত দাবি করেছেন, বর্ধনের বক্তব্য ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
অবশ্য পশ্চিমবঙ্গের বাম নেতারা তৃণমূলের সঙ্গে লড়াইকেই সঠিক পন্থা বলে মনে করছেন এই কারণে যে, মমতা সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কানি দিচ্ছেন।
সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এক নির্বাচনী জনসভায় বলেছেন, বিজেপি ও তৃণমূলকে থামাতে পারলেই সব কিছু ঠিক হবে। কারণ তারা সাম্প্রদায়িকা উস্কে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিভাজন তৈরি করছে।