সমাজের কথা ডেস্ক॥ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের ‘দিন শেষ’ বলে মন্তব্য করেছেন খোদ সিমেনটেক অ্যান্টিভাইরাসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান ডাই!
‘বর্তমান অ্যান্টিভাইরাসগুলো কেবল শতকরা ৪৫ ভাগ ম্যালওয়্যার আক্রমণ প্রতিহত করতে পারে এবং সাইবার অপরাধ বিরোধী অস্ত্র হিসেবে অ্যান্টিভাইরাসের দিন ফুরিয়ে এসেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডাই জানিয়েছেন, হ্যাকাররা প্রতিদিন সাইবার আক্রমণ চালাতে যে হারে নতুন নতুন অভিনব পন্থা আর বাগ ব্যবহার করছে তাতে শতকরা ৫৫ শতাংশ সাইবার আক্রমণই চিহ্নিত করতে পারে না বাণিজ্যিক অ্যান্টিভাইরাসগুলো।
আশির দশকে বাণিজ্যিক অ্যান্টিভাইরাসের উদ্ভাবক সিমেনটেক কর্পোরেশন। বাজারে বহুল প্রচলিত নর্টন অ্যান্টিভাইরাস তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটি। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমান অ্যান্টিভাইরাসগুলো ক্রেতার সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বদলে ক্ষেত্রবিশেষে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ফেলে এমন ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে ডাইয়েল বক্তব্যে।
অন্যদিকে ক্যাসপারস্কি ল্যাব প্রতিষ্ঠাতা ইউজিন ক্যাসপারস্কির বক্তব্য অনুযায়ী, সাইবারজগতে ম্যালওয়্যারের প্রভাব ও উপস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে স্টাক্সনেট পরবর্তী সময়ে। সাইবার আক্রমণের উদ্দেশ্যে তৈরি ম্যালওয়্যারগুলোর গঠন এখন খুবই জটিল। ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতেও ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন কম্পিউটার ভাইরাস। আর ভাইরাসগুলো এতটাই বিপজ্জনক যে নির্মাতার একটি পদক্ষেপে ডেটা চুরি করার জন্য তৈরি ভাইরাস থেকে ভয়াবহ সাইবার অস্ত্রে রূপান্তরিত হতে পারে ম্যালওয়্যারগুলো।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভাইরাস আর ম্যালওয়্যার ঠেকাতে আশানুরূপ ফল না পাওয়ায় কৌশল বদলাতে বাধ্য হয়েছে সিমেনটেক। সাইবার আক্রমণের বিরুদ্ধে ‘প্রতিরক্ষা’ কৌশল বাদ দিয়ে সাইবার হুমকি চিহ্নিত করে তাৎক্ষনিক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার উপযোগী অ্যান্টিভাইরাস তৈরিতে পন্থা অবলম্বন করছে প্রতিষ্ঠানটি।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ডেটা লিক, চুরি হওয়া ডেটার হাত বদল ঠেকানো, কম্পিউটার সিস্টেমে হ্যাকারদের অনুপ্রবেশসহ সব ধরণের সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলায় উপযোগী পণ্য তৈরি করার পন্থা বেছে নিয়েছে সিমেনটেক। ক্যাসপারস্কি ল্যাব আর ম্যাকাফির মতো অ্যান্টিভাইরাস নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো একই পন্থা বেছে নিয়েছে আগেই।