নিজস্ব প্রতিবেদক॥ যশোরে বিএডিসি’র এক কর্মকর্তার আত্মহত্যার চেষ্টা ও সুইসাইড নোট নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে ওই কর্মকর্তা বিএডিসি (উদ্যান) যশোরের উপ সহকারী পরিচালক লিছন হাওলাদার ‘সুইসাইড নোট’ লিখে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শনিবার বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
সুইসাইড নোটে লিছন হাওলাদার লেখেন, “ আজ আমার এই পরিস্থিতির জন্য একমাত্র দায়ী অত্র দপ্তরে কর্মরত যুগ্ম-পরিচালক জনাব মো: খোরশেদ আলম এবং সহকারী পরিচালক পপি বৈরাগী। আমাকে গত বুধবার ৩০/৪/২০১৪ ইং তারিখে মাঠ থেকে জেডি তুলে দিয়ে সমস্ত শ্রমিকদের কাছে অপমান করেছে। যার জন্য আমাকে এই পথ নিতে হলো। আমার দায়িত্বে থাকাকালীন খামারের সমস্ত শক্তি সহকারী পরিচালক পপি বৈরাগীর কাছে হস্তান্তর করে এবং আমার সমস্ত মান সম্মান নষ্ট করে আমাকে মাঠ থেকে তুলে দেয়া হয়েছে। আমার শ্রমিক ভাইদের মাঝে এই চিঠি যদি পৌঁছে আপনার এর প্রতিশোধ নিবেন। জনাব খোরশেদ আলম এই পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণ দায়ী।” চিঠির নিজে তিনি স্বাক্ষর করেছেন।
এই নোট লিখে শুক্রবার রাতে ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন লিছন হাওলাদার। কিন্তু শ্রমিকরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
উদ্যানের কয়েকজন শ্রমিক জানান, উপ সহকারী পরিচালক লিছন হাওলাদার মাস্টার রোলে শ্রমিকদের মাঠে কাজ করানোর দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু যুগ্ম-পরিচালক খোরশেদ আলম তাকে সরিয়ে দিয়ে করে পপি বৈরাগীকে ওই দায়িত্ব দেন।
এরপর গত বুধবার লিছন হাওলাদার শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করাতে গেলে শ্রমিকদের সামনেই তাকে অপমান অপদস্থ করা হয়। এরপর থেকে তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন।
গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে কয়েকজন শ্রমিক উপ-সহকারী পরিচালকের ঘরে তার সাথে দেখা করতে যান। এ সময় তার আচরণ অস্বাভাবিক হওয়ায় শ্রমিকরা চলে আসলেও তাকে নজরে রাখার চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তার ঘরের সব জানালা-দরজা বন্ধ দেখে সন্দেহ হওয়ায় শ্রমিকরা ডাকাডাকি শুরু করেন। কোনো সাড়া না পাওয়ায় পরে দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একইসাথে তার সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সৌমেন জানান, বিএডিসি কর্মকর্তা লিছন হাওলাদারের আত্মহত্যার চেষ্টার খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাকে অপমান করায় তিনি এ ঘটনা ঘটান বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।
সুইসাইড নোটের অভিযুক্ত বিএডিসি (উদ্যান) যশোরের যুগ্ম-পরিচালক খোরশেদ আলম জানান, লিছন হাওলাদারকে অপমান করা হয়নি। তাকে সহকারী পরিচালকের সাথে সমন্বয়ক করে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। এটাকে যদি কেউ অপমান বলে মনে করেন তাহলে কি করার আছে?
অপরদিকে, সহকারী পরিচালক পপি বৈরাগী জানিয়েছেন, লিছন হাওলাদারের সাথে আমার কোন বিরোধ নেই। কিন্তু তিনি কেন আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করলেন সেটি জানা নেই।
বিবিধ যশোরে বিএডিসি কর্মকর্তার আত্মহত্যার চেষ্টা ও সুইসাইড নোট নিয়ে তোলপাড়!