সমাজের কথা ডেস্ক : মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় সুপার বোর্ড নামের টি কে গ্রুপের মালিকানাধীন একটি বোর্ড তৈরির কারখানায় লাগা আগুন ৯ ঘণ্টা পার হয়েছে। তবুও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন। কারখানার ভেতরে এখনো পুড়ছে পাটখড়ি। ফায়ার সার্ভিস বলছে, পুরাপুরি আগুন নেভাতে আরও সময় লাগবে।
আজ রবিবার রাত ১০টার দিকে বিষয়টি জানান গজারিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন অফিসার রিফাত মল্লিক।
তিনি বলেন, ‘আগুন বাইরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা না থাকলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও সময় লাগবে। পুরো কারখানা জুড়েই বোর্ড তৈরির পাটখড়ি মজুত আছে। শুধু নিচ থেকে আগুন নেভানো সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে উপর থেকে পানি ছেটানোর বিকল্প নেই। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট কাজ করছে।’
এর আগে, আজ দুপুর একটার দিকে সুপার বোর্ড নামের টি কে গ্রুপের মালিকানাধীন বোর্ড তৈরির কারখানায় পাটখড়ি মজুত রাখা গুদামে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নেভাতে গিয়ে কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয় সাতজন আহত হন। তাদের মধ্যে তিনজনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন মাহিম (৩৫), শরিফুল ইসলাম (৩০) ও মো. হিরণ (৩২)। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল থেকে ওই কারখানায় কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। দুপুর ১টার দিকে কারখানায় আগুন জ্বলতে দেখা যায়। এ সময় শ্রমিক ও স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কারখানার পাশেই নদীতে পাটখড়ি বোঝাই তিনটি ট্রলার ছিল। একপর্যায়ে কারখানার আগুনের ফুলকি বাতাসের মাধ্যমে ওই ট্রলারে পড়ে। এতে পাটখড়িসহ ইঞ্জিনচালিত ট্রলার তিনটি ভস্মীভূত হয়।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মী আবুল কাসেম বলেন, ‘কারখানার ভেতরে প্রচুর পরিমাণে পাটখড়ির মজুদ ছিল। সকালে কাজ করেছিলাম। প্রতিষ্ঠানের একপাশে সামান্য আগুনের ফুলকি দেখা যায়। পরে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। পাটখড়িতে লাগা আগুন মুহূর্তেই সম্পূর্ণ কারখানায় ছড়িয়ে যায়। পরে প্রতিষ্ঠান ভেতর আমরা যারা ছিলাম, তারা নিরাপদে বেরিয়ে আসি।’
আগুন কীভাবে লেগেছে এ বিষয়ে কারখানার শ্রমিক তরিকুল ইসলাম জানান, ‘তাদের কারখানার পাশে একটি ওয়েল্ডিং করার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের ওয়েল্ডিং করার সময় আগুনের ফুলকি তাদের গোডাউনের পাটখড়িতে এসে পড়ে। সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।’
হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, ‘কারখানাটিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যথাযথ ছিল না। এ বিষয়ে আমরা একাধিকবার তাদের সতর্ক করলেও তারা বিষয়টি আমলে নেয়নি।’
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে প্রতিষ্ঠানটির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কথা বলতে রাজি হননি।
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব খান জানান, আগুন সম্পূর্ণ বন্ধ না হলেও নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে শুরু করেছে। তবে কী কারণে, কীভাবে আগুন লেগেছে বা ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ হয়েছে জানা যায়নি।