১২ই মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
কেশবপুরে শিশু হত্যা
১৩দিনের জমজ শিশুকে ডোবায় ফেলে হত্যা

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের কেশবপুরে ১৩দিনের জমজ সন্তানকে ডোবায় ফেলে হত্যা করেছে মা। স্বামীর পরকীয়া ও পারিবারিক কলহের জের ধরে সুলতানা ইয়াসমিন (২৭) নামের এক পাষন্ড মা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

 

মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কেশবপুর পৌর শহরের সাহাপাড়া সংলগ্ন এলাকায়। খবর পেয়ে পুলিশ ডোবা থেকে জমজ শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা এবং ঘাতক মাকে আটক করেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ এপ্রিল কেশবপুর পৌর শহরের সাহাপাড়া সংলগ্ন এলাকার আব্দুল লতিফ হাওলাদারের মেয়ে সুলতানা ইয়াসমিনের সাথে আবু বক্কার সিদ্দিকের বিয়ে হয়।

 

দু’জনের বিয়ের পূর্বেই তাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা বিয়ে ছিলো। সুলতানা ইয়াসমিনের প্রথম স্বামীর অহনা ইয়াসমিন (১১) নামের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর সুলতানা বুঝতে পারেন তার স্বামী আবু বক্কার অন্য নারীতে আসক্ত। সেজন্য স্বামীকে সুপথে ফেরাতে বাচ্চা নেওয়ার চিন্তা করেন সুলতানা।

 

যার কিছুদিন পর সুলতানা গর্ভে সন্তান আসে। সুলতানার গর্ভে সন্তান থাকা অবস্থায় স্বামী আবু বক্কার আরো বেপরোয়া জীবন—যাপন শুরু করেন। তবুও সুলতানা তার গর্ভের সন্তান ভূমিষ্ট হলে স্বামীর স্বভাব চরিত্র পরিবর্তন হতে পারে বলে মনে করেন।

গত ১০ নভেম্বর রাতে কেশবপুর পৌর শহরের মাতৃমঙ্গল ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সুলতানার জমজ ছেলে ও মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। জন্মের পর থেকে জমজ শিশুদের শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান।

 

সেখানে চার দিন চিকিৎসার পর বাচ্চাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। পুত্র সন্তানটির জন্মের পর হতে ফুসফুস, রক্তসহ বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিলে কেশবপুর হোসেন প্যাথলজিতে ডাক্তার কামরুজ্জামানের অধীনে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু সুস্থ না হওয়ায় গত ২১ নভেম্বর পুত্র সন্তানটিকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় পুনরায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাবে।

 

ইতোমধ্যে ২১ নভেম্বর দিবাগত রাতে পুত্র সন্তানটি নিস্তেজ হয়ে যায়। ওইসময় সুলতানা মৃতপ্রায় পুত্র সন্তানটিকে বাড়ির পাশের ডোবায় নিক্ষেপ করে। এরপর ঘরে ফিরে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে এবং কন্যা সন্তানটিকেও সকলের অগোচরে একই ডোবায় জীবন্ত নিক্ষেপ করে। পরবর্তীতে সুলতানা ঘরে ফিরে বাচ্চাদের পাওয়া যাচ্ছে না বাড়ির সকলকে জানায়।

 

পরিবারের সদস্যরা বাচ্চা দুটিকে খেঁাজাখুজি করতে থাকে। ওইসময় সুলতানার পিতা আব্দুল লতিফ বাচ্চা পাওয়া যাচ্ছে না বলে ফোন করে থানা পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে খেঁাজাখুজির একপর্যায়ে বাড়ির পাশে ডোবা থেকে প্রথমে পুত্র সন্তানটির মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং অপর নিখোঁজ কন্যা বাচ্চাটিকে খুঁজতে থাকে। পরবর্তীতে কন্যা সন্তানটি মৃত অবস্থায় একই ডোবা হতে উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিকভাবে সুলতানা ইয়াসমিনসহ তার পরিবারের সকল সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে সুলতানা তার পুত্র সন্তানসহ জীবিত কন্যা সন্তানটিকে সকলের অগোচরে ডোবায় নিক্ষেপের কথা স্বীকার করেন। তবে বিষয়টি নিয়ে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, সুলতানা ইয়াসমিন স্বামীর সাথে পারিবারিক কলহের জেরে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে নিজ সন্তানদের ডোবায় নিক্ষেপ করে হত্যা করেছে।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশুদের মা সুলতানা খাতুন জমজ সন্তান হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram