গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা—ময়ময়সিংহ রেলপথে ভয়ংকর নাশকতার সঙ্গে সরাসরি জড়িত কয়েকজনকে খুব দ্রুতই গ্রেপ্তার করেছে আইশৃঙ্খলা বাহিনী। এ নিয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেছেন সংশি¬ষ্ট পুলিশ কমিশনার। এ পর্যন্ত যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের অন্যতম গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮নং ওয়ার্ডের বিএনপির নির্বাচিত কমিশনার হাসান আজমল ভুঁইয়া, যিনি গাজীপুর সদর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি। ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত অন্যরাও বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা—কর্মী। তাদের উদ্দেশ্য ছিল আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমানে বিরাজমান সুশৃঙ্খল পরিবেশ বিনষ্ট করে জনগণের মধ্যে ভীতি সঞ্চার এবং এর মাধ্যমে দেশে—বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি ও মিডিয়া কাভারেজ। এর জন্য সারাদেশে বিভিন্ন সময়ে যানবাহনে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি বেছে নেওয়া হয়েছিল রেলপথকে— যাতে ব্যাপক প্রাণহানি ও সম্পদহানি ঘটে। উলে¬খ্য, এই ঘটনায় ওই এলাকায় আন্তঃনগর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এর ফলে ট্রেনের এক যাত্রী নিহত ও ১২ জন আহত হন। সর্বোপরি বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা— ময়মনসিংহ রেল সংযোগ। নাশকতাকারীরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন স্থান থেকে রেললাইন কাটার যন্ত্রপাতি এবং গ্যাস সিলিন্ডার সঙ্গে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছে। ঘটনাস্থলের অন্তত ২০ ফুট রেললাইন কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে সন্ত্রাসীরা। সর্বশেষ ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের ৩টি বগিতে আগুন দিয়েছে হরতাল—অবরোধকারীরা।
এ ঘটনায় মা ও শিশুসহ ৪টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। এর আগেও দেশের অন্তত তিনটি স্থানে রেলস্টেশন ও রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা তিনটি ট্রেনে আগুন দিয়েছে হরতাল—অবরোধকারীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার এবং মামলার খবরও আছে। সার্বিক অবস্থাদৃষ্টে বলা যায়, এসব শুধু নাশকতা নয়, বরং দেশবিরোধী অপকর্ম—অপরাধ। যে বা যারা এহেন জঘন্য অপরাধ করেছে, তারা দেশ ও মানবতার শত্রু। অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনানুগ উপায়ে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া বাঞ্ছনীয়।
বিএনপির ডাকা দফায় দফায় হরতাল—অবরোধ কর্মসূচি ঢিলেঢালাভাবে পালিত হলেও জনজীবন ও যানবাহন চলাচলে তেমন প্রভাব দেখা যায় না। তাই বলে বিএনপির রাজধানী ঢাকাসহ দেশের নানা স্থানে চোরাগোপ্তা হামলা থেমে থাকেনি। ২৮ অক্টোবর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৫০টি যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ঢাকায় আগুন দেওয়া হয়েছে ১৬৩টি যানবাহনে। জনমনে স্বভাবতই প্রশ্ন জেগেছে যে, এসব কিসের আলামত? বিএনপি কি ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে—পরের মতো দেশব্যাপী জ্বালাও—পোড়াও, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, বোমাবাজি, পেট্রোলবোমাসহ ভয়াবহ অগ্নিসন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চাইছে? দলটি কী ক্রমশ সন্ত্রাসী দলে পরিণত হচ্ছে?
এমনিতে বিএনপি নেতা—কর্মীদের প্রকাশ্য কার্যক্রম তেমন চোখে পড়ে না। বিজয় দিবসে জনসমাবেশ করলেও নেতা—কর্মীর উপস্থিতি ছিল কম। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন, বিএনপি কি এভাবেই চালিয়ে যাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম? বিএনপি কি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখবে? নাকি আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে চালিয়ে যাবে চোরাগোপ্তা হামলা, অগ্নিসন্ত্রাস ও মানুষ হত্যার রাজনীতি? এর ফলে চূড়ান্ত পরিণামে কি লাভ হচ্ছে বিএনপির? সে অবস্থায় অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতা ঘটিয়ে দেশ ও মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে রাজনীতির মাঠে বিএনপির জন্য আর জায়গা থাকবে না। সর্বস্তরের জনগণ তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে এবং প্রতিহত করবে।
যুব—টাইগারদের প্রাণঢালা অভিনন্দন
শাবাশ বাংলাদেশ। যুব—টাইগারদের প্রাণঢালা অভিনন্দন। এক কথায় দুর্দান্ত পারফর্মেন্স, চমৎকার ক্রীড়ানৈপুণ্য। অনূর্ধ্ব—১৯ এশিয়া কাপে এবার অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের যুবারা। বিজয় দিবসের রাতে বাংলাদেশের মেয়েদের ঐতিহাসিক জয়ে জাতি আপ¬ুত হয়েছিল। শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১১৯ রানের জয় ছিল দারুণ। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে রানের নিরিখে এটাই বাংলাদেশের মেয়েদের সবচেয়ে বড় বিজয়। আগের বড় জয়টি ছিল এক যুগ আগে বিকেএসপিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৮২ রানে। বিজয় দিবসে প্রাপ্ত ক্রিকেট জয়ের আনন্দের রেশ না কাটতেই এলা যুবাদের জয়। আমিরাতকে উড়িয়ে এশিয়া কাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের যুবারা।