২৮শে এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সেই নারী সাংবাদিকের লাশ হস্তান্তরের যে সিদ্ধান্ত

সমাজের কথা ডেস্ক : রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে নিহত নারী সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রী অথবা বৃষ্টি খাতুনের লাশ এখনো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে তার নাম জানা যায় বৃষ্টি খাতুন।

এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্রেও নাম রয়েছে বৃষ্টি খাতুন। বাবার নাম সবুজ শেখ, মায়ের নাম বিউটি বেগম। বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বনগ্রাম গ্রামে। অন্যদিকে একটি চাকরির সিভিতে লেখা রয়েছে তার নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী, বাবার নাম অভিরূপ শাস্ত্রী এবং মায়ের নাম লিখেছেন অপর্ণা শাস্ত্রী। সিভিতে তিনি নিজের বর্তমান ঠিকানা লিখেছেন সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, মৌচাক। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়াতেও তিনি তার নাম ব্যবহার করতেন অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। যার কারণে তার লাশ হস্তান্তর নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন। তাই ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট পাওয়ার পর অভিশ্রুতির লাশ হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এদিকে ওই নারী সাংবাদিকের পরিচয় নিয়ে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। কয়েকদিন ধরেই দেখা যায় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এক নারী শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট মর্গের সামনে। তিনি নিজেকে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী বা বৃষ্টি খাতুনের বান্ধবী হিসেবে পরিচয় দেন।

নাম পরিচয় গোপন করার শর্তে ওই নারী গণমাধ্যমকে বলেন, কয়েকমাস আগেও ওই নারী সাংবাদিকের নাম ছিল অভিশ্রুতি বৃষ্টি। ২০১৯ সাল থেকে আমাদের পরিচয়। আমি ওর থেকে দুই বছরের বড়। তাকে অনেক বিষয় নিয়ে পরামর্শ দিতাম। তার পারসোনাল জীবন সর্ম্পকে অনেক কিছু জানতাম।

তিনি বলেন, ২০২১ সালে তার মায়ের সাথে আমার কথা হয়। তার মা আমাকে ফোন করে। ওর আসল সমস্যা কী তা আমার কাছে জানতে চান। আমি তার মাকে বলি— আন্টি আপনার মেয়ের কোনো দোষ নাই, এটা টিনএজ বয়সে এ রকম একটু—আধটু হয়ে থাকে।

তার আসল নাম কী জানতে চাইলে বৃষ্টির বান্ধবী জানান, আমি ২০১৯ সাল থেকে দেখছি সে অভিশ্রুতি বৃষ্টি নামেই ছিল। হয়ত ৩/৪ মাস আগে সে ফেসবুকে তার নাম চেঞ্জ করতে পারে। তবে প্রেমের কারণে তার নাম চেঞ্জ করতে পারে বলে জানান তার ঘনিষ্ট বান্ধবী।

এদিকে ওই নারী সাংবাদিকের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকশায় চলছে শোকের মাতম। তার মা, বাবা, বোন, পাড়া প্রতিবেশি এমনকি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও বলছেন বৃষ্টি সবুজ শেখের মেয়ে। সবুজ শেখ বলেন, ব্ল্যাড টেস্ট করা হবে যদি সত্য না হয়, আমি আইনের আশ্রয় নেব। এক নারী প্রতিবেশি বলেন, এই ছবি বৃষ্টির। আমি এই বাড়িতে বউ হয়ে আসার পর থেকেই তাকে দেখছি। ও সবুজ চাচারই মেয়ে। প্রমাণ হিসেবে দেখান স্কুল কলেজ ও স্কুল—কলেজের সার্টিফিকেট। তার ছোট বোনের প্রশ্ন, কেন তার বোনকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে না। অবিলম্বে তার বোনকে ফেরৎ চান ওই সাংবাদিকের ছোট বোন।

তবে ভিন্ন দাবি করেছেন রমনার কালি মন্দিরের সভাপতি উৎপল সহা। তিনি জানান, আমাদের সাথে তার মন্দিরের কানেকটিভিটি বা কাজের সম্পৃক্ততা ছিল। সবুজ শেখ মিথ্যা কথা বলছেন, অভিশ্রুতির প্রকৃত বাড়ি ভারতের বানারসে। গত আট মাস ধরে সে এই মন্দিরে অনেকটাই কানেকটেড।

তবে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের কোনো পাসপোর্ট ছিল না বলে জানান তার বান্ধবী। তিনি বলেন, বৃষ্টির কোনো পাসপোর্ট ছিল না। তবে কীভাবে পাসপোর্ট করতে সে বিষয়ে আমাদের একাধিকবার কথা হয়েছে।

বৃষ্টি ওরফে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে পড়েছেন গ্রামের বিদ্যালয়ে। উচ্চ মাধ্যমিক পড়েছেন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকার ইডেন কলেজে দর্শন শাস্ত্র নিয়ে পড়ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জন নিহত হন। এর মধ্যে ওই নারী সাংবাদিকও ছিলেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram