সুদ ইসলামে হারাম। যে সুদ গ্রহণ করে, যে সুদ দেয়, যারা সুদের লেনদেনের সঙ্গে জড়িত সবাই অপরাধী। এই সত্য আমাদের অনেকেরই জানা। তারপরও দেখা যায়, সুদের পক্ষে কিছু খোঁড়া যুক্তি মানুষ দেখায়। দিন দিন এমন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তারা নিজেরা সুদ খেয়ে অপরাধী। অন্যদের অপরাধী করতে চায়।
সুদের মতো ভয়াবহ গোনাহ আর হয় না। পবিত্র কোরআনে সুদের ক্ষেত্রে যত কঠোর ভাষা প্রয়োগ করা হয়েছে, অন্য কোনো গোনাহের ব্যাপারে এমনটি করা হয়নি। বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা আল¬াহকে ভয় করো এবং সুদের যা বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা মুমিন হও। যদি তোমরা না করো (সুদের বকেয়া না ছাড়ো, সুদের কারবার অব্যাহত রাখো) তবে আল¬াহ ও তার রাসুলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে নাও...।’ —সুরা বাকারা : ২৭৮—২৭৯
বর্ণিত আছে, সুদ সত্তর প্রকার পাপের সমষ্টি। তার মধ্যে সবচেয়ে নিম্নতম হলো— আপন মায়ের সঙ্গে ব্যভিচারের সমতুল্য। —মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ১৫৩৪৫
অবসরপ্রাপ্ত একজন মানুষ। ব্যাংকে বিস্তর টাকা আছে। সেই টাকার সুদে চলেন তিনি। কোনো কাজ করেন না। টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে নারাজ। এই বয়সে ঝুঁকি নিতে চাই না। ব্যবসা করে কী হবে। সব ব্যবসার পরিবেশ নেই। এমনসব কথা বলেন তারা। অথচ তারা চাইলেই নিজে না হোক। অন্যের ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারেন। সে সুযোগ অবারিত। ছোট বড় বিভিন্ন ব্যবসা করার সুন্দর পরিবেশ আমাদের দেশে আছে।
আল¬াহ আয়ের শত পথ খোলা রেখেছেন। অলস মানুষেরা, সুদখোররাই কেবল তা দেখেন না। ইসলাম পরিশ্রমকে সমর্থন করে। অথচ টাকা হলে আমরা অলসতাকে বেছে নিই। সুদের মতো নিকৃষ্ট গোনাহ করতে বিবেকে বাধে না।
সুদের পক্ষে খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে সুদের টাকায় জীবিকা নির্বাহ করলেন। আবার রাতভর আল¬াহকে ডাকলেন। নামাজ এক ওয়াক্তও বাদ দিলেন না। এটা তো স্রেফ নিজের সঙ্গে নিজের প্রতারণা। কারণ আল¬াহ সবচেয়ে পবিত্র। তিনি পবিত্রতাকে পছন্দ করেন। বলা হয়েছে, হে রাসুলরা, তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকর্ম করো...।’ —সুরা মুমিনুন : ৫১
হারাম পন্থায় উপার্জিত সম্পদ থেকে আহার করে ইবাদত করলে তা কবুল হয় না। নবী কারিম (সা.) বলেছেন, বৈধ জীবিকার ইবাদত ছাড়া কোনো ধরনের ইবাদত আল¬াহর কাছে পৌঁছে না। —সহিহ বোখারি : ৭৪৩০
সুদ কিন্তু সুদই। তাকে যে নামই দিন না কেন। হারাম সুদ খেয়ে, আল¬াহর নিষেধ না মেনে আপনি আল¬াহকে পেতে চাইছেন। এতটা নির্বোধ হলে তো চলে না।
আল¬াহ তার দিকে ফিরে আসার পথ সব সময় খোলা রেখেছেন। সুদ ছেড়ে দিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে তওবা করলে আশা করা যায়, আল¬াহ ক্ষমা করে দেবেন।