‘গ্রামীণ জনপদ হবে স্মার্ট’
নিজস্ব প্রতিবেদক : কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেছেন, পার্টনার প্রোগ্রামের মাধ্যমে দেশের ৩ লাখ হেক্টর জমিতে ফল ও সবজি, ২ লাখ হেক্টর জমিতে জলবায়ুসহিষ্ণু ধানের জাত, ২ লাখ হেক্টর জমিতে অন্য দানাশস্য ফসল, ডালফসল, তেলফসল ও উদ্যান ফসল আবাদের এলাকা বাড়বে। দেশের ৪৯৫টি উপজেলায় কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ করাই এই প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য। এর আওতায় ৫টি ফল ও ১০টি সবজিসহ মোট ১৫টি ফসলকে চাষাবাদে আধুনিকায়ন করা হবে। একইসাথে দুই লাখ ১৭ হাজার কৃষককে স্মার্ট কৃষক হিসেবে প্রশিক্ষিত করা হবে। প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার পার্টনার প্রোগ্রামের কার্যক্রমের মাধ্যমে এদেশের কৃষক, কৃষিসেবা, কৃষি সমাজ এবং কৃষি ব্যবসা সর্বোপরি বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদ রূপান্তরিত হবে স্মার্ট বাংলাদেশে।
শুক্রবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপি আঞ্চলিক কর্মশালায় কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার এসব কথা বলেন। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’ প্রোগ্রামের এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাসের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিএডিসি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা অনু বিভাগ) মাহবুবুল হক পাটোয়ারী, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ওমর মোহাম্মদ ইমরুল মহসিন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বাজেট ও মনিটরিং) নাজিয়া শিরিন, যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম, যুগ্ম সচিব (গবেষণা) ড. সাবিনা ইয়াসমিন, ডিএইর সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক মো. তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, প্রোগ্রাম কো—অর্ডিনেটর মিজানুর রহমান ও প্রোগ্রামের অতিরিক্ত প্রোগ্রাম পরিচালক ড. গৌর গোবিন্দ দাস। স্বাগত বক্তব্য দেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. আবু হোসেন।
কর্মশালায় পার্টনার প্রোগ্রাম নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে জানানো হয়, পার্টনার প্রোগ্রামের অনুমোদিত পাক্কলিত ব্যয় প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার, বিশ^ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ইফাদের আর্থিক সহযোগিতায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৭টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন হবে। এর স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে রয়েছে ৮টি প্রতিষ্ঠান। ৫ বছর মেয়াদী এই কার্যক্রমের শেষ সময় ২০২৮ সালের ৩০ জুন।
৪৯৫ টি উপজেলায় কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ করাই এই প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য। এর মাধ্যমে দেশের ৩ লাখ হেক্টর জমিতে ফল ও সবজি, ২ লাখ হেক্টর জমিতে জলবায়ুসহিষ্ণু ধানের জাত, ২ লাখ হেক্টর জমিতে অন্য দানাশস্য ফসল, ডালফসল, তেলফসল ও উদ্যান ফসল আবাদের এলাকা বাড়বে। একইসাথে ১ লাখ হেক্টর জমিতে উন্নত আধুনিক সেচ এলাকাও বৃদ্ধি হবে। পাশাপাশি ২০ হাজার তরুণ ও নারী উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। প্রোগ্রামে আরো থাকছে কৃষি সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কার, গবেষণা ও উন্নয়ন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও সেচ যন্ত্রপাতি, মোবাইল ক্রপ ক্লিনিক, কৃষিকাজে অনুদান, বিপণন ব্যবস্থার মানউন্নয়ন, কৃষক এবং কৃষি কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ। এছাড়াও এই প্রোগ্রামে দেশের ২ কোটি ২৭ লাখ ৫৩ হাজার ৩২১ জন কৃষকের মাঝে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে।