১৮ই মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রেলপথকে নিরাপদ করতে চাই কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ
58 বার পঠিত

শহীদুল ইসলাম : কোনো দেশের অর্থ—সামাজিক উন্নয়নে যাতায়াত ও পরিবহন ব্যবস্থার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এই যাতায়াত ব্যবস্থায় স্থল, জল ও আকাশ পথের ভূমিকা অতীব গুরুত্ববহ। স্থলপথ দুই ধরনের, সড়ক ও রেলপথ। বাষ্পীয় ইঞ্জিন উদ্ভাবনের সূত্র ধরে রেলগাড়ির জন্ম। ১৮৬২ সালে দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জাগতি পর্যন্ত ৫৩.১১ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়। এটিই বাংলাদেশের প্রথম রেলপথ। ভ্রমণ সবার কাছেই আনন্দের। নদীপথে ভ্রমণ ধীরগতিসম্পন্ন, সড়ক পথে ঝুঁকিপূর্ণ, আকাশ পথে ভ্রমণ আরামদায়ক হলেও ব্যয়সাপেক্ষ। কিন্তু রেলপথে ভ্রমণ সহজ, আরামদায়ক এবং উপভোগ্য—যদি সেটা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হয়।

সম্প্রতি রেলে নাশকতা হচ্ছে। রেলে দুর্ঘটনার শঙ্কাও রয়েছে। যাত্রীদের আস্থাহীনতা দূর করতে চাই বাড়তি সতর্কতা ও সচেতনতা। প্রতিটি রেলকর্মী দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কর্তব্য পালন করলে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবেই। সড়ক পরিবহনের ওপর চাপ কমাতে রেলকে গতিশীল করার বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার বিকল্প নেই। সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে রেলে নাশকতা হয়েছে। বিগত ১৯ ডিসেম্বর ভোর আনুমানিক সাড়ে ৪টায় নেত্রকোনা থেকে ছেড়ে আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছে। পরে কমলাপুরের উদ্দেশ্যে ছাড়ে ট্রেনটি।

বনানী সৈনিক ক্লাব এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় আগুনের সূত্রপাত ঘটে ট্রেনটিতে এবং পরে ট্রেনটি এসে থামে তেজগাঁও স্টেশনে। এর পরের ঘটনা বড় নির্মম! বড় হৃদয় বিদায়ক! আগুনের লেলিহান শিখা মুহূর্তেই গ্রাস করে মা নাদিরা আক্তার পপি ও তার তিন বছরের শিশুপুত্র ইয়াসিনসহ চারজনকে। আগুনের লেলিহান শিখা যখন দাউ দাউ করে জ¦লছিল তখন হয়তো শিশু ইয়াসিন ভয়ে মায়ের বুকে মুখ লুকাছিল। কিন্তু যা হওয়ার তা হয়ে গেছে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই। ঢাকা থেকে সিলেটগামী আন্তঃনগর পারাবত ট্রেনে আগুন এবং টাঙ্গাইল স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। অল্পের জন্য রক্ষা পায় ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জগামী একটি ট্রেন যাতে তিন যুবক হাতবোমা বিস্ফোরণের চেষ্টা করে। কিন্তু বিধি বাম। তাদের হাতেই বিস্ফোরিত হয় সেই হাত বোমা।

তাছাড়া, আরও বিভিন্ন ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। তারা আগুন বা হাতবোমা নিক্ষেপ করেই ক্ষান্ত হয়নি, ভিন্নপথে ট্রেনের সর্বনাশে মত্ত হয়। গাজীপুরে রেললাইন কাটে মাত্র পাঁচ মিনিটে, নিলফামারীতে ফিস প্লেট খুলে নেয়। রেললাইন কেটে রাখায় গাজীপুরের ভাওয়াে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে একজন নিহতসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। এভাবেই রেলে চলছে একের পর এক অনাকাক্ষিত নাশকতা। রেল আমাদের জাতীয় সম্পদ। এর রক্ষণা—বেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সকলের। রেল কার্মকর্তা ও চালকদের গাফিলতির জন্যও কিছু ট্রেন দুর্ঘটনায় নিপতিত হয়েছে। এতে বেশ হতাহতও হয়েছে।

রেলপথকে নিবিঘ্ন ও নিরাপদ করতে চাই কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ। যা জনস্বার্থে সরকারকে গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে ট্রেনে ওঠার সময় যাত্রীদের দেহ তল্লাশি এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে যাত্রী পরিবহন নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি জনগণকেও এ কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে। ফলে সমূহ বিপদ থেকে রক্ষা পাবে ট্রেন এবং রেল যাত্রা হবে শঙ্কামুক্ত, নিবিঘ্ন, স্বস্তিদায়ক, শুভ এবং নিরাপদ।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram