১৮ই মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
যবিপ্রবি : চাকরি প্রার্থীদের অপহরণের ঘটনায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) লিফট অপারেটরের নিয়োগ পরীক্ষা দিতে এসে অন্তত ১৫ চাকরিপ্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী প্রার্থী আরাফাত হোসেন বাদি হয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ৬ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। তবে এ ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

এদিকে আসামিদের আটকের জন্যে বৃহস্পতিবার দিনগত রাত দুইটার দিকে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান ছাত্র হলে অভিযান চালাতে যায়। কিন্তু ছাত্রলীগ আগেই অভিযানের খবর পেয়ে হলের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লিফট অপারেটর পদে চাকরি পরীক্ষা দিতে ক্যাম্পাসে গেলে শহীদ মসিয়ূর রহমান ছাত্রহল নিবাসী বেলাল হোসেন, রাফি হাসান, রেদোয়ান হাসান, রাব্বি, শোয়েব, শাহিনুরসহ অন্তত ১৫ জন তাদেরকে ধরে হলের ভিতরে নিয়ে আটকে রেখে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড, এসএস পাইপ, হকিস্টিক ও লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে চোখ বেঁধে যশোর— ঝিনাইদহ মহাসড়কে নিয়ে ছেড়ে দেয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি প্রার্থীদের আটকে রাখার ঘটনায় এক প্রার্থী ৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্যে রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলে রেইট (অভিযান) দেওয়া হয়। কিন্তু কাউকে আটক করা হয়নি।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, রাত দুইটার দিকে পুলিশ ক্যাম্পাসে আসে। ছাত্রলীগের কর্মীরা আগেই খবর পেয়ে যায় যে, পুলিশ রাতে ছাত্র হলে অভিযান চালাবে। যে কারণে হলের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে ছাত্রলীগ হলের ভিতর থেকে শে¬াগান দিতে থাকে। যে কারণে পুলিশ রাতে হলের ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করেনি।

বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি লিফট অপারেটরের ১২টি পদে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আবেদনপত্র যাচাই—বাছাই শেষে ৩৮ প্রার্থীকে পরীক্ষার জন্যে ক্যাম্পাসে ডাকা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে চাকরিপ্রার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে থাকেন।

সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত তাদের ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে খবর আসে প্রার্থীদের মধ্যে অত্যন্ত ১৫ জনকে ক্যাম্পাসের ছাত্র হলে নিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ ক্যাম্পাসে পেঁৗছালে বিকেলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি তদন্তের স্বার্থে সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক সংগ্রহ করতে গেলে সেটিও ছিনিয়ে নেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপর সন্ধ্যায় আটকে রাখা প্রার্থীদের মধ্যে আরো পাঁচজনের পরীক্ষা নেওয়া হয়। ৩৮ প্রার্থীর ২৬ জন শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দিতে সক্ষম হন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ার হোসেন বলেন, চাকরির পরীক্ষা দিতে এলে ১১ প্রার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার লোকজন আটকে রাখে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছাত্র হলের যে কক্ষগুলোতে প্রার্থীদের আটকে রাখা হয়, সেসব কক্ষে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা থাকে।

ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকা হলে বিকেলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অপহরণ ও সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ড ডিস্ক ছিনতাইয়ের ঘটনার অপরাধে মামলা করা হবে। একই সঙ্গে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। আগামী রোববার বিশ্ববিদ্যালয় রিজেন্ট বোর্ডের বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে। তারপরেই মামলা ও তদন্ত কমিটি হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram