হীরেন পণ্ডিত : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো ৭ জানুয়ারি। আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ১১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৩৬ সদস্যের মন্ত্রিসভা শপথগ্রহণ করে। এর আগে ২৭ ডিসেম্বর ইশতেহারে সরকার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ : উন্নয়ন দৃশ্যমান বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ স্লোগান দিয়ে জনগণকে তাদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করে ১১টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়েছে আওয়ামী লীগ। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা, আয়ের মধ্যে সঙ্গতি প্রতিষ্ঠা, দেশের রূপান্তর ও উন্নয়নে তরুণ এবং যুব সমাজকে সম্পৃক্ত রাখা, পুঁজি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, ঘুষ—দুর্নীতি উচ্ছেদ, ঋণ—কর—বিলখেলাপি ও দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় এনে তাদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দলটি। এ ছাড়া গুরুত্ব পেয়েছে কৃষি, সেবা, অর্থনৈতিক ও শিল্প উৎপাদন খাত, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের মৌলিক অধিকারও নিশ্চিত করা। প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নাগরিক সুবিধা সম্প্রসারণ করা হবে এই অঙ্গীকার করেছে আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে তরুণদের গ্রামেই আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানে নগর ও গ্রামের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করার উদ্দেশ্যে কৃষিবিপ্লবের বিকাশ, গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতিকীকরণের ব্যবস্থা, কুটির শিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল রূপান্তর সাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে অঙ্গীকার যুক্ত করেছিলেন। গ্রামকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির কেন্দ্রীয় দর্শন হিসেবে বিবেচনা করে গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বিশেষ গুরুত্বসহকারে এ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
প্রতিটি উপজেলায় রাস্তাঘাট উন্নত ও সম্প্রসারিত হয়েছে, যা প্রতিটি গ্রামকে উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে এবং উপজেলার সঙ্গে জেলা সদর ও জাতীয় সড়ক যুক্ত রয়েছে। প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ সুনিশ্চিত হয়েছে। সুপেয় পানি এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা সম্পন্ন হয়েছে, যা আরও উন্নত ও সম্প্রসারিত করা হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যয়ভার সরকার গ্রহণ করেছে। বেসরকারি ¯ু‹লে শিক্ষকের বেতন—ভাতার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
আমাদের সমাজে রাজনৈতিক যে সংঘাত—সমস্যা আছে, তার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের অর্থনীতি আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ। জ্বালানি স্বল্পতা, মুদ্রাস্ফীতি, আয়বৈষম্য, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সিন্ডিকেট আছে। নিম্নআয়ের মানুষ বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে আছে। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ তো আছেই। এসব চ্যালেঞ্জ উত্তরণ বিষয়ে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সহজ কোনো সূত্র নেই। এগুলো বড় মাপের বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে পদ্ধতিগত পরিবর্তনের কাজ করতে হবে। (সংক্ষেপিত)
লেখক : প্রাবন্ধিক ও গবেষক