সোমেল রানা, মেহেরপুর : ইট পোড়াতে জ¦ালানি হিসেবে মেহেরপুরের ইটভাটাগুলোতে আগাম কাঠসংগ্রহ শুরু হয়েছে। ভাটাগুলোর নিকট রাস্তার পাশে এসব কাঠ ফেলে রাখা হয়েছে। মেহেরপুর জেলায় ১০৩টি ইটভাটা। যার মধ্যে ১৮টি হাওয়া ভাটা। কোন ভাটারই নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকার কারণে জেলা প্রশাসন থেকে লাইসেন্স দেয়া হয়নি। শুধুমাত্র একটি ট্রেড লাইসেন্সে ভাটাগুলোতে ইট তেরী করা হয়। ফলে শতভাগ ইটভাটায় অবৈধ। ভাটা মালিকদের দাবি, সরকারের নীতিমালা মেনে ভাটা স্থাপনে তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু কোন অনুমোদন পাচ্ছেন না বছরের পর বছর।
মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের জরিপের তথ্যমতে, প্রতি মৌসুমে একটি ভাটায় ২৫ লাখ ইট তৈরিতে ২ লাখ ৫০ হাজার ঘনফুট মাটি ব্যবহার করা হয়। একটি ভাটায় দৈনিক ২৫০ থেকে ৪০০ মণ জ্বালানি কাঠ প্রয়োজন। গড়ে প্রতিদিন ৪০ হাজার মণ জ¦ালানির প্রয়োজনে নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ৮০ লাখ মন জ¦ালানির প্রয়োজন হবে। যার চাহিদা মেটাতে ভাটাগুলোতে আগাম কাঠ সংগ্রহ করা হচ্ছে। সরেজমিনে মেহেরপুর শহরের উপকন্ঠে যাদবপুর সড়কে আজিমদ্দিনের ইটভাটার জন্য সংগ্রহ করা রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হাজার হাজার মন কাঠের গুল দেখা যায়। জেলার বিভিন্ন ভাটার পাশেই তরতাজা গাছ কেঠে জ¦ালানীর চাহিদা মেটাতে সংগ্রহ করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, ইতোমধ্যে বড় বড় বাগান ও বনাঞ্চলের গাছ ধ্বংস করে লাখ লাখ টন কাঠ সংগ্রহ করা হয়েছে ভাটাগুলোতে। ইটভাটার ৯০ শতাংশ নির্মিত হয়েছে আবাদি জমি ও আবাসিক এলাকায়। জেলা প্রশাসন টিনের চিমনি বন্ধ করতে পারলেও ভাটাগুলোতে কাঠ পোড়ানো বন্ধ, আবাদি জমির উপরের অংশের মাটি ব্যবহার বন্ধে ভূমিকা রাখতে পারছে না। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউট, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, সামাজিক বন বিভাগ ও ইটভাটার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের সুপার ডা. জমির মোঃ হাসিবুস সাত্তার জানান, আবাসিক এলাকায় ইটভাটা স্থাপনের কারণে ভাটার ধোয়াতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এই কর্মকর্তা পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে আবাসিক এলাকায় ভাটাস্থাপন করা ক্ষতিকর বলে মত প্রাশ করেন।