মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি : সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার কথা বলে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার বেসরকারি সমাজ উন্নয়ন সংস্থা এস ইউ এস এর বিরুদ্ধে।
সংস্থাটির দুইজন কর্মকর্তা এক হাজার গ্রাহকের প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । গ্রাহকরা ইউএনও অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছে।
মহম্মদপুর সদরের কানাইনগর এলাকায় ব্রাক অফিসের পেছনে কামাল মাস্টারের বাড়ি ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছিল সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (এসইউএস)। গতকাল মঙ্গলবার কার্যালয়ের সামনে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতারিত নারীরা জড়ো হয়। ভুক্তভোগী ধোয়াইল গ্রামের রিক্তা, রেহেনা, তারা, চরপাচুড়িয়া গ্রামের আশরাফুল, অন্তরা, মৌশা গ্রামের চুমু, চায়না, মাসুরা, শিরগ্রাম গ্রামে চায়না,অবিরন, তোহেব জানান, প্রায় দুই মাসের বেশি সময় আগে তাদের গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে নারীদের নিয়ে সমিতি গঠন করেন।
সমিতির প্রতিটি নারী সদস্যকে দুই বছর মেয়াদে কম সুদ ও সহজ শর্তে এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে জানায়। ঋণের বিপরীতে সঞ্চয় হিসেবে দশ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়। টাকা জমা হলেই প্রত্যেক গ্রাহককে এক লাখ করে টাকা ঋণ দেওয়া হবে তারা প্রতিশ্রুতি দেন।
মঙ্গলবার সকালে ঋণের টাকা নেওয়ার জন্য তাদেরকে সদরের কার্যালয়ে আসতে বলেন। কার্যালয়ে এসে অফিস তালাবদ্ধ দেখতে পান তারা। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার বন্ধ। বাড়ির মালিক স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষক গাজী কামাল তাদের পরিচয় ও অবস্থান সম্পর্কে কিছু বলতে পারেন না। এনজিওর দুইজন কর্মকর্তা ছিলেন। একজনের নাম রানা, আরেকজনের নাম জানাতে পারেননি ভুক্তভোগিরা। রানা নামের ওই ব্যক্তির মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পটুয়াখালী হ-১১-১৫০৬। তার মোবাইল নম্বর ০১৮৭১৮১৮৫০৭
চরপাচুড়িয়া গ্রামের ওবাদুল¬াহ মোল্যা, জাহিদুল ইসলামসহ পাঁচজন অভিযোগ করে বলেন, তাদের স্ত্রী ছাগল বিক্রি করে ঋণের আশায় ১০ হাজার টাকা করে জমা দেন। প্রায় এক হাজার গ্রাহক তাঁদের অর্থ ওই এনজিওতে জমা করেন। অনেকে অধিক সুদের আসায় টাকা জমা করেন। অনেকে ঋণের টাকার বিপরীতে শতকরা ১০ ভাগ জামানত জমা রাখেন। টাকা হারিয়ে দরিদ্র এসব গ্রাহক পথে বসে গেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সমাজ উন্নয়ন সংস্থার (এসইউএস) কথিত চেয়ারম্যান রানার মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
বাড়ির মালিক গাজী কামাল জানান, কয়েকদিন আগে দুই জন তাঁর বাড়ি ভাড়া নিয়ে সাইনবোর্ড টাঙায়। কাগজপত্র দেখিয়ে চুক্তি করার কথা বলে তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রামানন্দ পাল জানান, সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (এসইউএস) নামের কোনো এনজিওর নাম তাদের তালিকায় নেই। তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই। তারপরও তিনি খোঁজখবর নেবেন বলে জানান।