নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্রুনাই দারুসসালামে বাংলাদেশ হাইকমিশন রবিবার (০৫মে) ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ পহেলা বৈশাখ উদযাপনের জন্য হাইকমিশন প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাহিদা রহমান সুমনার আমন্ত্রণে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রম্ননাই সরকারের সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাদুঘরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক পিঙ্গিরান হাজি রোসলি বিন পিঙ্গিরান হাজি হালুস।
অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথি ও অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশী কমিউনিটির সদস্য, কূটনৈতিক কোরের সদস্য, রয়েল ব্রম্ননাই আর্মড ফোর্সেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কোর্স এ অংশগ্রহণরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সেনা কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের সদস্য, সাংবাদিক, গায়ক প্রভৃতি। বাংলাদেশী ব্যবসায়ী ও রে¯েত্মারাঁর মালিকরা তাদের নিজ নিজ স্টলে সাজানো খাবার ও অন্যান্য পণ্য প্রদর্শন করেন। অনুষ্ঠান শুরম্ন হয় বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনার ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’তে অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন ২০১৬ সাল থেকে ইউনেস্কো কর্তৃক ‘ইনট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। হাইকমিশনার বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। একটি জাতিকে পরিচয় দেওয়ার জন্য এবং বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রক্ষায় এবং বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য অক্লাšত্ম পরিশ্রমের জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন।
তিনি ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩১’ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনান। তিনি ব্রম্ননাইয়ের বাংলাদেশ কমিউনিটি, বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এবং স্বেচ্ছাসেবক ও পৃষ্ঠপোষকদের অবদানের জন্য আšত্মরিকভাবে ধন্যবাদ জানান। সম্মানিত অতিথি স্টল পরিদর্শন করেন এবং প্রতিনিধিদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বাংলাদেশী প্রবাসী যারা স্টল দিয়েছেন তারা তাদের বিভিন্ন পণ্যের বৈচিত্র্য আগত সকল অতিথি ও দর্শনার্থীদের কাছে প্রদর্শন করতে পেরে আনন্দিত এবং গর্বিত। ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশী খাবার যেমন পান্তা- ইলিশ, কেক (পাতিশাপ্ত, চিতই ইত্যাদি), বিভিন্ন জাতের শাকসবজি এবং অন্যান্য বাংলাদেশি খাবার প্রদর্শন করা হয়।
স্টলে সম্মানিত অতিথিদের বাংলাদেশী বিভিন্ন খাবার পরিবেশন করা হয়, অতিথিগণ রান্নার সুস্বাদুতার প্রশংসা করেন। চমৎকার অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অতিথিরা বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে ধন্যবাদ জানান। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় অংশে বিভক্ত ছিল - ‘মিউজিক্যাল চেয়ার’, ‘পিলো পাসিং’, ‘পাংচারিং বেলুন’, ‘চামচ চালানো’, হাড়ি ভাঙ্গা, বিস্কুট দৌড় ইত্যাদি।
শিশুরা 'যেমন খুশি তেমন সাজো'-এ তাদের প্রফুল্ল অংশগ্রহণের মাধ্যমে সবাইকে মুগ্ধ করে। আরও ছিল 'ফ্যাশন শো’ যা বিভিন্ন দেশের মানুষের অংশগ্রহণে ছিল। বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ‘বাংলা নববর্ষ উদযাপন’-এর শতবর্ষব্যাপী অনুশীলনের অংশ হিসেবে দর্শকদের মনোরঞ্জনের জন্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা মঞ্চস্থ করা হয়। বাংলাদেশী গায়কদের পাশাপাশি ব্রম্ননাই থেকে আসা গায়কদের ফলপ্রসূ সুরেলা কণ্ঠের জন্য শ্রোতারা তৃপ্তি ও আনন্দের সাথে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন। সকল প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের টোকেন পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে পুরস্কৃত করা হয়।
হাইকমিশনার নাহিদা রহমান সুমনা তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং কাউকে পিছনে না রেখে একটি সমষ্টিগত উপায়ে যে কোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম একটি উন্নত সমাজ তৈরি করতে সম¯ত্ম পার্থক্য ভুলে যাওয়ার জন্য তাদের অনুরোধ করেন।