নেংগুড়াহাট (মনিরামপুর) প্রতিনিধি: হেমন্তের শিশির ভেজা আর হাল্কা ঠাণ্ডা জানান দিচ্ছে শীত আসছে। খেজুর গাছ থেকে নামবে মিষ্টি রস, গাছিরা খেজুর গাছ প্রস্তুত করেছেন। তাই মনিরামপুর উপজেলার নেংগুড়াহাট অঞ্চলের ঝাঁপা বাজার কুমোরপাড়া, রাজগঞ্জ মোবারকপুর কুমোরপাড়া, চাকলা কাঁঠালতলা কুমোরপাড়া ও কাঁঠালতলা কুমোর বাড়িতে চলছে মাটির নতুন ঠিলে বা ভাড় বিক্রি ও তৈরির ব্যস্ততা।
মৌসুমের শুরুতে কুমোর পাড়ার নারী পুরুষরা সবাই এখন আসন্ন শীতের খেজুর রস সংগ্রহের পাত্র মাটির ভাড় নিয়ে পার করছেন দিনের বেশিরভাগ সময়। ক্রেতারাও ছুটে যাচ্ছেন তা কিনতে। খেজুরগাছ পরিচর্যা শেষে রস নেওয়ার জন্যে বাঁধবেন মাটির ঠিলে বা ভাড়। নতুন পাতিলে রস আর গুড় এ মৌসুমে একটি কাঙ্খিত উপাদান।
তাই মৌসুমী ব্যবসায়ীরাও প্রস্তুত হচ্ছেন রসের হাঁড়ি, পিঠার ছাঁচ, গুড়ের ভাড় তৈরি ও বিক্রয় করতে। মনিরামপুর উপজেলা রস গুড়ের জন্যে বিখ্যাত রাজগঞ্জ ও নেংগুড়াহাট অঞ্চল। ফলে এখানে রস, গুড়,পাতিলসহ বিভিন্ন উপাদান বেশি পাওয়া যায়। ঝাঁপা বাজার কুমোরপাড়া, রাজগঞ্জ মোবারকপুর কুমোরপাড়া, চাকলা কাঁঠালতলা কুমোর পাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের কুমোররা হরেক রকম মাটির জিনিসপত্র তৈরির সাথে রস গুড়ের পাতিল তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত,এক দিকে চলছে কাদামাটির তৈরি পাতিল রোদে শুকানো অপরদিকে চলছে বিশাল চুলি¬তে আগুনের তাপে পোড়ানো। এদিকে দিনে দিনে খেজুর গাছের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে তাই চাহিদা কম হলেও সীমিত লাভে হলেও এই পেশাটি ধরে রেখেছেন তারা। এই মৌসুমে এসব মাটির জিনিসপত্র উপজেলার বিভিন্ন বাজারে তাদের তৈরিকৃত পণ্যের পসরা সাজিয়ে বেচাকেনা করেন। ১০টাকা থেকে শুরুকরে সর্বোচ্চ ৪০টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে এ সব পণ্য।
লক্ষণপুর গ্রামের ক্রেতা আব্দুস ছাত্তার ও রওশন গাছি বলেন, গুড় তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাটির ঠিলে বা ভাড়, খুঁড়িতে রেখেই জমাতে হয় পাটালি। এবছর ভালোমানের নতুন ভাড় কিনছি ৩০থেকে ৩৫টাকা প্রতিটি হিসেবে।
বড় আকারের লম্বা কলস ৪০থেকে ৫০টাক। কম দামে ভালো মানের জিনিস পেয়ে খুশি তিনি। এ বিষয়ে কথা হয় মোবারকপুর কুমার পাড়ার আনন্দ, নিরাপদ, স্বপনসহ কয়েকজনের সাথে। তারা বলেন, এ পেশায় আগের মতো লাভ হয় না, বংশের ঐতিহ্য ধরে রেখেছি মাত্র। চাহিদা কম থাকায় দাম অনেক কম,এই ব্যবসা বাড়াতে পারিনি পূর্বের দামেই বিক্রি করছি। তবে এই মৌসুমে শীতের আমেজ আগেভাগেই তাই বেচাকেনা অনেক ভালো হবে বলে আশা করছি।