নিজস্ব প্রতিবেদক : মামলা প্রত্যাহার না করায় মাকে অপহরণের পর কম্পোজ করা দুটি কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়ার ঘটনায় ব্যারিস্টার ছেলে একেএম মর্তুজা রাসেলসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার চৌগাছা উপজেলার মাকাপুর গ্রামের হায়দার আলীর স্ত্রী লতিফা হায়দার এই মামলা করেছেন। বিচারক অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ আহমেদ মামলাটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি পুলিশ যশোরকে আদেশ দিয়েছেন।
এই মামলার অন্য আসামিরা হলো, চৌগাছার মাকাপুর গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে বিশাল ও তরিকুল ইসলামের ছেলে রাজিব।
বাদী মামলায় জানিয়েছেন, বাদী ও তার স্বামীকে খুন জখমের ভয়ভীতি দেখিয়ে জমিজমা লিখে নেয়ার জন্য চেষ্টা করে ছেলে রাসেল। এই ঘটনায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আসামি রাজিবসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। এরপর থেকে আরো ক্ষিপ্ত হয় ব্যারিস্টার একেএম মর্তুজা রাসেল। বাদীর ছোট ছেলে আল ইমরানের গোডাউন ভেঙ্গে পাট চুরি করে এবং ক্ষেতের গম কেটে নিয়ে যায় রাসেলসহ অন্যরা। এই ঘটনায় আল ইমরান বাদী হয়ে আরো একটি মামলা করেন। ফলে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে রাসেল বাদী হয়ে তার মা, ভাই, বোন, ভগ্নিপতিসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে চৌগাছা থানায় একটি মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা করেন। এছাড়া বাদী লতিফা হায়দারকে খুনজখমসহ নানা ধরণের ভয়ভীতি দেখানোর কারণে বর্তমানে তিনি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শংকরহুদা গ্রামে পিতার বাড়িতে অবস্থান করছেন।
ব্যারিস্টার রাসেলের দায়ের করা মামলায় তার ভাই আল ইমরান ও বোন পারভীন বিউটিকে গত ২৭ মার্চ পুলিশ আটক করে। খবর পেয়ে ওইদিন দুপুর ১২টার দিকে যশোর আদালতে আসেন লতিফা হায়দার। এসময় ছেলে ব্যারিস্টার রাসেলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের জন্য তার মাকে আদালতে চতুর্থতলা থেকে জোর করে নিয়ে এসে গাড়িতে তোলে। এরপর তাদের কাছে থাকা কম্পিউটারে কম্পোজ করা দুইটি নীল রঙের কাগজে জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। ওই সময়ে লতিফা হায়দারের আইনজীবীর কাছ থেকেও স্বাক্ষর করিয়ে এনে দিতে বলে। এতে রাজি না হলে তাকে খুন জখমের ভয় দেখায়। এসময় লতিফা হায়দারের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে রক্ষা করেন। কিন্তু তার কাছ থেকে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া কাগজ দুুইটি দিয়ে যে কোন ধরণের ক্ষতি সাধন করিতে পারে বলে লতিফা হায়দার সন্দেহ পোষণ করছেন।
উল্লেখ্য গত ২৭ মার্চ দুপুরে ব্যারিস্টার একেএম মর্তুজা রাসেল একজন সিনিয়র আইনজীবীর সাথেও চরমভাবে দুর্ব্যহার করেছেন। এই নিয়ে আদালতপাড়ায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।