আলম শাইন ; পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে দেশের নিরীহ মানুষের। যা কোনো মতেই কাম্য নয়। কারণ সমগ্র বিশ্বের মানুষের জন্যই পাসপোর্ট প্রাপ্তি হচ্ছে নাগরিকের অন্যতম একটি অধিকার। হাজারো—লাখো মানুষ যে অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে অনিয়মের শিকার হচ্ছেন। বিষয়টাকে উন্নীত করার প্রয়াসে সরকার সচেষ্ট হলেও কিছু অসাধু কর্মকর্তা—কর্মচারীর অপকৌশলের কারণে তা বন্ধ হচ্ছে না।
বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা দ্রুত পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন দালালের দৌরাত্ম্যের কারণে। সেই তুলনায় দেশে অবস্থানরত মানুষ বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন খানিকটা বেশি। আর্থিক লেনদেন এর প্রথম কারণ। প্রবাসীদের তুলনায় দেশের মানুষ দালালের হাতে ঝটপট অর্থ ধরিয়ে দিতে পারেন না। ফলে যথাসময়ে পাসপোর্টও পান না।
এবিষয়ে বলতে হয় পাসপোর্ট আর দালাল দুটি একই সূত্রে গাঁথা; সমার্থক শব্দের মতোই যেন। ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন ব্যাপারটা কত কঠিন। আর এটি হচ্ছে প্রকৃত বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রেই। পাসপোর্ট গ্রহণ দুঃসাধ্য না হলেও খুব সহজেও মিলছে না কিন্তু। পদে পদে বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করে পাসপোর্ট গ্রহণ করতে হচ্ছে দেশের নাগরিকদের। দালাল না ধরলে যথাসময়ে পাসপোর্ট পাওয়া যায় না। কর্মরত অফিসার ফিরেও তাকান না। নানা অজুহাত দেখান, বিভিন্ন ধরনের কাগজ জমা দেওয়ার ফিরিস্তি দেন। আগেই বলেছি পাসপোর্ট প্রাপ্তি হচ্ছে নাগরিক অধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি অধিকার। সেই অধিকার বাস্তবায়নে সরকার ইচ্ছে করলে জোরাল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে বোধকরি। প্রয়োজনে জাতীয় পরিচয় পত্রের মতো পাসপোর্ট ঘরে ঘরে পৌঁছানোর উদ্যোগ নিতে পারে। নিতে পারে পাসপোর্ট ফিও। তবে সেটি যেন হয় সহনীয় মাত্রার ফি। (প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও পাসপোর্ট ফি কমিয়ে দেওয়া উচিত)।
পাসপোর্ট প্রাপ্তির জটিলতা দীর্ঘদিনের হলেও বিষয়টি আমাদের গা সওয়া হয়ে গেছে মনে হচ্ছে। যদি আমরা মনে রাখতে পারি যে, একটি পাসপোর্ট বিতরণ মানে হচ্ছে একজন বাংলাদেশির বহির্গমনের সুযোগ হওয়া এবং তার মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স পৌঁছানো; তাহলেই আশা করি, অতি সহজেই বিষয়টির সুরাহা হয়ে যায়। আমরা সেটাই প্রত্যাশা করি।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলামিস্ট