পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : পাইকগাছার গড়ইখালী ইউনিয়নের ভাঙ্গন কবলিত খুদখালী এলাকার বিকল্প বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ প্রায় শতভাগ শেষ হয়েছে। দুই এক দিনের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হলে ঝুঁকিমুক্ত হবে এলাকার মানুষ। এদিকে একটি মহল অপপ্রচার করার মাধ্যমে নির্মাণ কাজ বাঁধাগ্রস্থ করছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন গড়ইখালী ইউনিয়নের পূর্ব কুমখালীর খুদখালী এলাকায় ভাঙ্গন দীর্ঘদিনের। ভাঙ্গন প্রতিরোধে টেকসই কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এবং ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় ইতোমধ্যে বিপুল পরিমাণ ফসলী জমি ও ঘর—বাড়ি শিবসা নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। প্রতিবছর দুর্যোগ আসলেই নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় গড়ইখালী ইউনিয়নবাসীর। এদিকে দীর্ঘ প্রতীক্ষারপর খুদখালী এলাকার ভাঙ্গন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে টেকসই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
উপজেলার লস্কর ইউনিয়নের বাইনতলা স্লুইচ গেট, আলমতলা ভাঙ্গন প্রতিরোধ এবং গড়ইখালীর খুদখালী এলাকার ভাঙ্গন প্রতিরোধে ৫০ কোটি টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এ বছরের মে মাসের দিকে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আররাদ কর্পোরেশন পল্টুন নিয়ে খুদখালী এলাকায় প্রাথমিক কাজ শুরু করলেও চূড়ান্ত কাজ শুরু করতে বিলম্ব হওয়ায় ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ঝুঁকি এড়াতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার পাশে ১৭৫ মিটার দৈর্ঘে্যর বিকল্প বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃর্পক্ষের তদারকি ও ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে চলতি বছরের জুন মাসের দিকে বিকল্প বেড়িবাঁধের প্রায় ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়। বাঁধ এরিয়ার মধ্যে দুটি পুকুর থাকায় এবং বর্ষা মৌসুম চলে আসায় বাঁধের দক্ষিণ মাথার ১০ ভাগ কাজ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়।
এদিকে বর্ষার প্রভাব কমে যাওয়ায় গত শুক্রবার থেকে বাঁধের অবশিষ্ট কাজ পুনরায় শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী আরাফাত হোসেন। নির্মাণ কাজ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, প্রথম পর্যায়ে বিকল্প বেড়িবাঁধের ৯০ ভাগ কাজ শেষ করা হয়। বর্ষার কারণে ১০ ভাগ কাজ ওই সময় সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। বৈরি আবহাওয়া কেটে যাওয়ায় পুনরায় কাজ শুরু করা হয়েছে। এ নিয়ে অপপ্রচারের কোন সুযোগ নেই।
ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আব্দুস সালাম কেরু জানান, খুদখালীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা অত্যন্ত ঝঁুকিপূর্ণ ছিল। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মূল কাজ শুরু করতে দেরি হওয়ায় ঝুঁকি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ১৭৫ মিটার দৈর্ঘে্যর বিকল্প বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। অতিরিক্ত বর্ষার কারণে ১০ ভাগ কাজ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। ইতোমধ্যে ভাঙ্গনের স্থানে ২ হাজার জিও ব্যাগ দেওয়ায় এবং ভাঙ্গনের সামনে পল্টুন রেখে দেওয়ায় ভাঙ্গন বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
পাশাপাশি বিকল্প বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজও দুই একদিনের মধ্যে শতভাগ শেষ হয়ে যাবে। এর ফলে খুদখালী এলাকার ভাঙ্গন নিয়ে কোন ধরণের ঝুঁকি থাকবে না। এরপর টেন্ডারের কাজ শুরু হলে শতভাগ ঝুঁকিমুক্ত হয়ে যাবে গড়ইখালী ইউনিয়নে। এনিয়ে যারা অপপ্রচার করছে তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার জন্য ইউনিয়নবাসীর প্রতি আহ্বান জানান ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আব্দুস সালাম কেরু।