ইমরান হোসেন পিংকু : যশোর শহরের ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে স্ট্রিট ফুডের দোকান। শহরের ফুটপাতা এবং বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও পার্কের সামনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সাজানো থাকে রকমারি খাদ্যের পসরা। ধুলোবালিতে একাকার এসব স্ট্রিট ফুড ছড়াচ্ছে রোগ ব্যাধি। দিনের পর দিন চলতে থাকা এমন পরিস্থিতিতেও নেই তেমন কোনো তদারকি।
যশোর শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানা, বকুলতলা, ঈদগাহ মোড়, পৌর হর্কাস মার্কেট, এমএম কলেজ মোড়, মণিহার, চিত্রা মোড়, পালবাড়ি, ধর্মতলা, আরবপুরসহ ২০/২৫ স্থানে ৩শ’ অধিক স্ট্রিট ফুডের দোকান গড়ে উঠেছে। এসব ফুটপাতে দোকানে তৈরি করা হচ্ছে, আটা—ময়দার রুটি, পরোটা, ফুচকা, বেল পুরি, চিকেন ফ্রাই, টিক্কা, কাবাব, বারগার, স্যান্ডুইচ, হালিম, সমুচা, সিঙ্গারা, আলুর চপ, পুরি, পিয়াজু, নুডুলস, ঝালমুড়িসহ হরেক রকমের খাবার। যা তৈরি হয় অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে। রাস্তা কিংবা রাস্তার পাশে খাবারগুলো তৈরি ও রাখায় ধুলোবালি খাবারের ওপর পড়ে। এসব খাবারের খাদ্যমান যেমন প্রশ্নবিদ্ধ তেমনি খাবারের জন্য অনুপোযোগী।
সচেতন নাগরিকরা বলছেন, ফুটপাতের বিক্রি জন্য নিদিষ্ট কোন নীতিমালা নেই। ফলে পথে ঘাটে মানহীন ও অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি হচ্ছে। আবার এসব খাবার ঢেকে না রাখায় ধোলাবালিতে রোগ ছড়াচ্ছে। স্ট্রিট ফুডের দোকানদারদের মধ্যে নেই কোন সচেতনতাবোধ।
যশোর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী বলেন, ফুটপাতালের এসকল স্ট্রিট ফুড অনেক মুখোরুচক হয়। এজন্য এসব খাবারে দিক আগ্রহ বাড়ে। এছাড়াও ফুটপাতের এসকল খাবারে দাম তুলনামুলক কম হয়। ফলে বিক্রি বেশি ফুটপাতের খাবারের। তবে ফুটপাতের স্ট্রিট ফুড খেয়ে পেট ও মাথা ব্যথা, ডায়রিয়া, আমাশয়, বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ ও কৃমি, যকৃতের সমস্যা, ক্ষুধামন্দা, জন্ডিস ও হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
যশোর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ আফসার আলী বলেন, শিশুরা অনেক দিন ধরে এসকল খাবার খেলে অপুষ্টি ও যকৃতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অভিভাবকদের উচিত হবে শিশুদেরকে বাহিরের অস্বাস্থ্যকর খাদ্য না দিয়ে। একই সঙ্গে বাচ্চাদের স্বাদ রুচিকে প্রাধান্য দিয়ে ঘরে খাবার তৈরি করে দিতে হবে।
খাবারের মান সম্পর্কে জানতে চাইলে দোকানিরা বলেন, আমরা চেষ্টা করি ভালোমানের খাবার বিক্রি করতে। রাস্তার পাশে খাবার বিক্রির কারণে একটু ধোলাবালি উড়ে আসে। তবে আমরা খাবার ঢেকে রাখি। রেষ্টুরেন্টে খাবার দাম বেশি; সেই তুলনায় আমাদের খাবারে দাম কম। এজন্য ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি।
এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সৈয়দা তামান্না তাসনীম বলেন, আমরা অভিযোগ পেলেই অভিযান পরিচালনা করি। সচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলাও হয়। আমরা আবারও অভিযান চালাবো।
এ ব্যাপারে নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, আমাদের আরও তদারকি বাড়ানো দরকার। আমরা এ ব্যাপারে খেঁাজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’