৪ঠা মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নারীর মর্মন্তুদ জীবন—যন্ত্রণা উপস্থাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে থিয়েটার ক্যানভাস আয়োজিত দক্ষিণ এশীয় নাট্যোৎসবের সপ্তম দিনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয়েছে ঢাকা শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের পরিবেশনায় নাটক ‘কী চাহ শঙ্খচিল’। দেশ বরেণ্য নাট্যজন মমতাজ উদ্দীন আহমেদ রচিত এ নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন খোরশেদুল আলম।

নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রৌশনারা চরিত্রে রওশন জান্নাত রুশন, ডাক্তার চরিত্রে মিন্টু সর্দার, আতর আলী চরিত্রে খোরশেদুল আলম, নার্স চরিত্রে আলীফা সুলতানা লিটা ও রজব আলী চরিত্রে মিরন উদ্দীন আলফা।

<<আরও পড়তে পারেন>> ‘সরকার’ মুছে ফেলেছেন মাহিয়া মাহি

নাট্যানুষ্ঠান শুরুর পূর্বে সংক্ষিপ্ত আয়োজনের মাধ্যমে যশোর আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজের অধ্যক্ষ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জেএম ইকবাল হোসেনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার হায়দার আলী শিম্বা এবং বক্তব্য রাখেন শহীদ কর্নেল জামিল স্মৃতি সংসদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন দোদুল।

নাটকে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের এক বেদনাময় অধ্যায় পাকসেনা কর্তৃক নারী নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এ নির্যাতন সভ্যতার ইতিহাসে কলংকিত এক ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীরা যুদ্ধচলাকালে যেমন ভোগ করেছে অবর্ণনীয় যন্ত্রণা তেমনি উত্তরকালেও তাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে একই অনুভূতির। অজস্র প্রশ্নবাণে ক্ষতবিক্ষত হতে হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষণের শিকার নারীরা।

সে মর্মন্তুদ জীবন—যন্ত্রণার আবেগমথিত নাট্যভাষ্য মমতাজউদদীন আহমদ’র ‘কী চাহ শঙ্খচিল’ এ নাটকের কাহিনী আবর্তিত হয়েছে একাত্তরে পাকসেনা কর্তৃক ধর্ষণের শিকার রৌশনারাকে কেন্দ্র করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীনের সাথে সাথে পাকিস্তানি জন্তুুদের বাংকার থেকে মুক্ত হয়ে রৌশনারা ঘরে ফিরে আসে।

রৌশনারার এই প্রত্যাবর্তনে পরিবারের সবাই আপাত খুশি হলেও তার পিছনে ছিল তাদের আত্মপ্রতিষ্ঠার লোভ। রৌশনারার জীবনের বিষাদময় আখ্যানকে পুঁজি করে তার স্বামী—শ্বশুর সবাই সামাজিক প্রতিষ্ঠা ও প্রতিপত্তি লাভ করেছে। স্বার্থসিদ্ধির পর রৌশনারার স্বামী—শ্বশুর অচিরেই শুরু করে তার গর্ভের সন্তান লালনকে নিয়ে সন্দেহ।

এ সন্তান তার স্বামীর ঔরশজাত হলেও তা বিশ্বাস করানো সহজ ছিল না। কেননা গর্ভধারণের আনন্দময় সংবাদটি স্বামীকে জানানোর আগেই পাকসেনারা তাকে ধরে নিয়ে যায় সেনা ছাউনিতে। ইতোপূর্বে তার গর্ভের সন্তান লালনকে আত্মপ্রতিষ্ঠার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করলেও প্রয়োজন ফুরালে পরিবারের সদস্যরাই তাকে গলা টিপে হত্যা করে। এরপর হত্যার সাক্ষী রৌশনারাকে মানসিক ভরসাম্যহীন রোগী হিসাবে চিহ্নিত করে বন্দিজীবন কাটাতে হয় হাসপাতালে।

সম্ভ্রম ও সন্তান হারানোর বেদনায় জর্জরিত রৌশনারার মাতৃহৃদয়ের হাহাকার এবং মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পর বাংলার আকাশে আবির্ভূত স্বার্থ ও সুযোগসন্ধানী শঙ্খচিলকে নির্মূল করার দৃঢ় প্রত্যয় ফুটে উঠেছে ‘কী চাহ শঙ্খচিল’ নাটকের কাহিনী বিন্যাসে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram