সমাজের কথা ডেস্ক : কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমার থেকে ফের গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। আজ সোমবার সকাল থেকে হোয়াইক্যং উনছিপ্রাং সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের অভ্যন্তরে টানা মর্টারশেল ও গোলাগুলির বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে।
নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মিদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে। সংঘর্ষের প্রভাব এসে পড়ছে সীমান্ত এলাকা টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে।
<<আরও পড়তে পারেন>> দুর্নীতির দায়ে অং সান সু চির আরও ৭ বছরের কারাদণ্ড
এ বিষয়ে হোয়াইক্যং কাঞ্জরপাড়া বাসিন্দার দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ‘দীর্ঘদিন গোলাগুলি ও মর্টারশেলের শব্দ বন্ধ থকলেও নতুন করে গতকাল রাত থেকে থেমে থেমে ভারী মর্টারশেলের শব্দ কানে লাগে। কখন যে সীমান্তে গোললাগুলি বন্ধ হবে জানি না। সীমান্ত এলাকায় যারা বসবাস করে তারা আতঙ্কে রয়েছে। আমাদের গ্রামে অনেকে কৃষিকাজ, লবণ চাষ, মাছের প্রজেক্টে কাজ করে সংসার চালায়। ভয়ে ভয়ে কাজ করতে হয় কোন সময় কোন দিক দিয়ে এসে গায়ে লাগে এই আতঙ্কে আছি।’
হোয়াইক্যং উত্তরপাড়া এক জেলে বলেন, ‘রাতে মর্টারশেলের শব্দ হয় এবং আজ সকালে কয়েক ঘণ্টা থেমে থেমে মর্টারশেলের শব্দ হয়। এ কারণে নাফনদীতে মাছ শিকারে যেতে পারছি না। কষ্টে আছি এবং পরিবার কেমনে চালাব সে নিয়ে অনেক চিন্তায় আছি। গত কয়েক দিন মিয়ানমারে গোলাগুলির বন্ধ ছিল। হঠাৎ গতকাল সকালে থেকে আবারও শুরু হয়।’
হোয়াইক্যং ২ নম্বর ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য সিরাজুল মোস্তাফা লালু বলেন, ‘আমার বাড়ির পেছন থেকে মিয়ানমার সীমান্ত দেখা যায়। গতকাল সকালে মর্টারশেলের এমন শব্দ হয়েছে সেটি বলে বোঝাতে পারব না। সে মর্টারশেলের শব্দে বাড়ি কাঁপছে। আমার বাড়ির পেছনে দাঁড়াইলে শুনতে পারবেন কী পরিমাণ শব্দ হয়।’
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘দীর্ঘদিন মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলি ও মর্টারশেলের শব্দ শোনা না গেলেও রাতে মৌলভীবাজার, ওয়াব্রাং সীমান্তের পূর্বে থেমে থেমে মর্টারশেলের শব্দ শোনা যায়। সীমান্ত এলাকার লোকজন আতঙ্কে রয়েছে। তাদের খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’
এ বিষয়ে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনোয়ারী বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে হোয়াইক্যং সীমান্তে কোনো ধরনের গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। তবে আজ সকাল থেকে আবারও শব্দ ভেসে আসছে। ওপার সীমান্তে দু’পক্ষের মধ্যে নিক্ষেপ করা মর্টারশেল ও ভারী গুলির বিকট শব্দ। এতে আবারও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সীমান্ত সংলগ্ন বাসিন্দারা।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। এ সময়ে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি।এরপর গতকাল সকালে সীমান্তের হোয়াইক্যং এবং শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে।’