নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের হোগলাডাঙ্গা গ্রামের দিনবন্ধু সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (২২) হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। ছিনতাই হওয়া মটরসাইকেলটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া চারজন হলেন, নড়াইল সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের শিশির সরকারের ছেলে সুমন সরকার (৩০), সরোজিত বিশ্বাসের ছেলে সজীব কুমার বিশ্বাস (২২), গৌতম রায়ের ছেলে আকাশ রায় (২১) ও নড়াগাতি থানার যোগানিয়া গ্রামের মো: সাদ্দাম হোসেন ওরফে বদিরকে (৩২)। এর মধ্যে চোরাই মটরসাইকেল রাখার অপরাধে বদিরকে (৩২) রোববার ভোরে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বদির স্বীকারোক্তি মোতাবেক দীপ্ত’র মোটরসাইকেলটি নড়াগাতি থানার বিলাহর মাঠের থেকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পিবিআই যশোর জেলার পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন পিপিএম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হোগলাডাঙ্গা গ্রামের দিনবন্ধু সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা গত শুক্রবার (২৪ ফেব্রম্নয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নিয়ে হোগলাডাঙ্গা পূর্বপাড়া আড়ংখোলায় নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান দেখার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন।
এরপর আর বাড়িতে আসেননি দীপ্ত। পরদিন শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাছের ঘেরে মরদেহটি ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয় লোকজন। দীপ্তকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নেয় আসামিরা।
পিবিআই ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ছায়াতদন্ত শুরু করে। তদন্তকালে পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিনের নেতৃত্বে ক্রাইমসিন টিম ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. শামীম মুসা সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ছায়া তদন্ত কালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন সময়ে তিন আসামিকে গ্রেফতার করে। পরের দিন ২৬ ফেব্রম্নয়ারি আরো একজনকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সূত্রে আরো জানা যায়, গ্রেফতার হওয়া সুমন সরকার, সজীব কুমার বিশ্বাস, আকাশ রায় ও ভিকটিম দীপ্ত সাহা মাদকাসক্ত ছিলেন। তারা একসঙ্গে বসে মাদক সেবন করতেন। সুমন, সজীব ও আকাশের টাকার প্রয়োজনে তারা দীপ্তকে হত্যা করে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা দীপ্তকে ফোন করে ঘটনাস্থলে আসতে বলে। দীপ্ত ঘটনাস্থলে আসলে আসামিরা দীপ্তকে গাঁজা বানাতে বলে। দীপ্ত গাঁজার মসলা বানানোকালে আসামিরা যোগসাজশে দীপ্ত’র গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে তাকে হত্যা করে লাশ পার্শ্ববর্তী ঘেরে ফেলে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আসামিদের দেয়া তথ্য ও যোগানিয়া গ্রামের মো: সাদ্দাম হোসেন ওরফে বদির স্বীকারোক্তি মোতাবেক মোটরসাইকেলটি বিলাহর মাঠের কলই ক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান জানান, দীপ্ত হত্যাকা-ের ঘটনায় রোববার সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।