১৩ই মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দুই চিকিৎসায় স্ট্রোকের রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন

ডা. মো.সাইদুর রহমান : স্ট্রোক মস্তিষ্কের একটি মারাত্মক জটিল রোগ। স্ট্রোক হয়েছে বোঝার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে জরুরিভাবে নিতে হবে। আমাদের মস্তিষ্কে সবসময় অক্সিজেন ও গ্লুকোজ সরবরাহ হয়ে থাকে। যদি কোনো কারণবশত মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়, তখন মস্তিষ্কের কোষগুলো মরে যেতে থাকে, স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা বাধাপ্রাপ্ত হয়। তখন শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা দেয়।

অনেক সময় শরীরের কোনো একটি অংশ প্যারালাইসিস হতে থাকে। আর একেই স্ট্রোক হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। স্ট্রোক দুইভাবে হয়ে থাকে। যেমন ইস্কেমিক স্ট্রোক ও হেমোরেজিক স্ট্রোক। আমাদের দেশে সাধারণত ৮৫ শতাংশ ইস্কেমিক স্ট্রোক হিসেবে বিবেচিত হয়। বাকি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হেমোরেজিক স্ট্রোক হয়ে থাকে। তাই ১০ থেকে ১৫ শতাংশ রোগীর অপারেশনের প্রয়োজনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়ে থাকে।

ইস্কেমিক স্ট্রোক : আমরা স্বাভাবিকভাবে এ স্ট্রোক বলতে যা বুঝি তা হলো, ব্রেইনে রক্ত চলাচলে আঞ্চলিকভাবে কোথাও বাধাপ্রাপ্ত হওয়া।

হেমোরেজিক স্ট্রোক : ব্রেইনের রক্ত চলাচলে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে রক্তনালিতে জমাট বেঁধে যাওয়া অথবা নালি ফেটে রক্ত ব্রেইনে ছড়িয়ে পড়া। সাধারণত নারীর তুলনায় পুরুষরা এই স্ট্রোকে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।

স্ট্রোকের কারণ : স্ট্রোকের অনেক কারণ আছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কারণ হলোÑ ট্রমা অথবা রোড এক্সিডেন্ট; উচ্চ রক্তচাপ; ডায়াবেটিস; অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা; রক্তে অতিরিক্ত চর্বির উপস্থিতি; অনিয়মিত খাবার গ্রহণ; অ্যালকোহল জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া; ইনফেকশাস ডিজিজ থেকেও এ স্ট্রোক হতে পারে। জন্মগতভাবে প্যারালাইসিস হতে পারে।

লক্ষণ : শরীরের একপাশ অথবা যে কোনো অংশ অবশ হতে পারে। কোথায় জড়তা অথবা কথা বলা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। চোখে ঝাপসা দেখা দিতে পারে অথবা একটি জিনিস দুটি দেখতে পারে। শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে কষ্ট হতে পারে। হঠাৎ প্রচণ্ড মাথাব্যথা শুরু হতে পারে। বমি ভাব হতে পারে অথবা বমি হতে পারে। ঘুম ঘুম ভাব হতে পারে। অনেক সময় রোগীর খিঁচুনি হতে পারে। আবার জ্ঞানও হারিয়ে ফেলতে পারে।

চিকিৎসা : স্ট্রোক করার চার ঘণ্টার মধ্যে যদি একজন বিশেষজ্ঞ নিউরোলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়া সম্ভব হয়, তা হলে খুব দ্রুত রোগীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব।

আধুনিক চিকিৎসায় স্বাভাবিক অবস্থায় রোগীকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব শতকরা ৯৮% ক্ষেত্রেই। এই চিকিৎসার জন্য রোগীর পরিবারকে দুটি দিক ভালো করে খেয়াল রাখতে হবে। গুরুত্বসহকারে দুটি চিকিৎসাও একসঙ্গে চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে আর তা হলোÑ মেডিসিন ও ফিজিওথেরাপি। এই দুই চিকিৎসার সমন্বয়ে রোগী আবার তার আগের অবস্থায় অর্থাৎ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন।

একজন নিউরোমেডিসিন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত কিছু ওষুধ সেবন করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থেকে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি দিতে হবে। তবেই রোগী তার স্বাভাবিক জীবনে খুব তাড়াতাড়ি ফিরে যেতে সক্ষম হবেন।

লেখক : চিফ কনসালট্যান্ট (ফিজিও)

রিএকটিভ ফিজিওথেরাপি সেন্টার

৪০৭ ফিনিক্স টাওয়ার (ষষ্ঠতলা), শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ এভিনিউ, তেজগাঁও, ঢাকা

সম্পাদক ও প্রকাশক : শাহীন চাকলাদার  |  ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আমিনুর রহমান মামুন।
১৩৬, গোহাটা রোড, লোহাপট্টি, যশোর।
ফোন : বার্তা বিভাগ : ০১৭১১-১৮২০২১, ০২৪৭৭৭৬৬৪২৭, ০১৭১২-৬১১৭০৭, বিজ্ঞাপন : ০১৭১১-১৮৬৫৪৩
Email : samajerkatha@gmail.com
পুরাতন খবর
FriSatSunMonTueWedThu
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31 
স্বত্ব © samajerkatha :- ২০২০-২০২২
crossmenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram